ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সহকারীরা দেশটির প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে পদত্যাগ করলে তার বেক্সিট চুক্তিতে সমর্থন দেবেন কিনা রক্ষণশীল দলের বিদ্রোহীদের কাছে তা জানতে চেয়েছেন। গত রোববার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন চেকারসে এক বৈঠক শেষে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সহকারীরা থেরেসা বিরোধীদের কাছে এমনটি জানতে চেয়েছেন বলে খবর দিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান।
ওই বৈঠকে উপস্থিত সূত্রের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, যে পর্যায়ের সহকারীরা এমনটি জানতে চেয়েছেন তাতে মনে হয় না এসব কর্মকর্তারা নিজে থেকেই এমন প্রশ্ন করেছেন। এর মধ্য দিয়ে ব্রেক্সিট ইস্যুতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের ইচ্ছার আভাস পাওয়া গেল।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দুই দফায় প্রত্যাখ্যাত হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র ব্রেক্সিট চুক্তি। এই চুক্তি নিয়ে নিজ দল রক্ষণশীল দলের সংসদ সদস্যদেরও বিরোধিতার মুখে পড়ছেন তিনি। আগামী সপ্তাহে পার্লামেন্টে তৃতীয় দফায় ভোটাভুটির কথা রয়েছে। গত রোববার রক্ষণশীল দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম বিবিসি আভাস দেয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগের প্রতিশ্রুতি দিলে নিজের ব্রেক্সিট চুক্তিতে দলীয় এমপিদের সমর্থন পেতে পারেন থেরেসা মে।
এমন পরিস্থিতিতে গত রবিবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন চেকারসে কনজারভেটিভ পার্টির এমপিদের সঙ্গে বৈঠক করেন থেরেসা মে। বৈঠকে কট্টরপন্থী ব্রেক্সিট সমর্থক হিসেবে পরিচিত এমপিদের মধ্যে বরিস জনসন, আইয়ান ডানকান স্মিথ, জ্যাকব রিস-মগসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। মঙ্গলবার গার্ডিয়ান জানিয়েছে, মূল বৈঠক শেষে কট্টরপন্থী এসব এমপিদের সঙ্গে একে একে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তার জানতে চান থেরেসা পদত্যাগ করলে ব্রেক্সিট চুক্তিতে তাদের সমর্থন পাওয়া যাবে কিনা।
গার্ডিয়ান জানায়, তিন ঘণ্টা ধরে চলা ওই বৈঠকে পদত্যাগের ইস্যুতে কোনও কথা বলেননি থেরেসা মে। তবে এক পর্যায়ে রিস-মগ এই ইস্যুটি তুলে ধরলে কোনও প্রতিক্রিয়া দেখাননি থেরেসা। ধারণা করা হচ্ছে ব্রেক্সিট চুক্তিতে পার্লামেন্টের অনুমোদন পেতে পদত্যাগের তারিখ ঘোষণা করতে পারেন থেরেসা মে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ২৯ মার্চের পরিবর্তে ১২ এপ্রিল যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে ইউরোপীয় নেতারা। আগামী সপ্তাহে থেরেসার চুক্তি অনুমোদন পেলে ব্রেক্সিট কার্যকরের সময়সীমা ২২ মে পর্যন্ত বাড়াতে রাজি আছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। আর তা না হলে বা কোনও বিকল্প পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলে আগামী ১২ এপ্রিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাবে যুক্তরাজ্য।