২২ মাসে এমন ভালো দিন আর পাননি ট্রাম্প!

২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণার সঙ্গে রুশ সংযোগ ছিল না বলে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন এ ঘটনা তদন্তে নিযুক্ত বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট মুলার। প্রতিবেদনের সংক্ষিপ্তসার রোববার মার্কিন কংগ্রেসে উপস্থাপন করা হয়েছে। তবে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদকে কাজে লাগিয়ে অবৈধভাবে বিচার বাধাগ্রস্ত করেছেন কি-না; সেবিষয়ে এতে কিছু বলা হয়নি।

কংগ্রেসের জন্য প্রতিবেদনটির সারসংক্ষেপ তৈরি করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার। ট্রাম্প জবাবে টুইট করেছেন, কোনো আঁতাত হয়নি, কোনো অন্তরায় তৈরি করা হয়নি।

ট্রাম্প বরাবর এই তদন্ত প্রক্রিয়াকে তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবে দাবি করে এসেছেন। রোববার তিনি বলেছেন, এটা এ দেশের জন্য লজ্জার যে এমন একটা ব্যপার হলো এবং পুরো তদন্তকে তিনি অবৈধ দাবী করে বলেন, তা ব্যর্থ হয়েছে।

ট্রাম্পের রুশ সংযোগ তদন্তের বিশেষ কৌঁসুলি নিযুক্ত হওয়ার ২২ মাসের মাথায় এ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন রবার্ট মুলার। তবে ইতোমধ্যে ট্রাম্পের সাবেক ছয়জন ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং কয়েক ডজন রুশ নাগরিককে অভিযুক্ত করা হয়েছে, কোন কোন ক্ষেত্রে তাদের জেলে পাঠানো হয়েছে।

রবার্ট মুলার তার প্রতিবেদনে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নতুন করে আর কোনও অভিযোগ তোলার সুপারিশ করেননি, তবে তিনি তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের পক্ষে কোন সাফাই ও দেননি। ট্রাম্পের ক্ষমতার ২৭ মাসের মাথায় এসে বহুল আলোচিত এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিবিসির উত্তর আমেরিকা বিষয়ক সম্পাদক জন সোপেল বলেছেন, ট্রাম্প তার প্রেসিডেন্সির মেয়াদে এমন ভালো দিন আর পাননি। এটাই তার সর্বোত্তম দিন।

যা আছে প্রতিবেদনে

অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বারের তৈরি করা তদন্ত প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে, কোন মার্কিন নাগরিক কিংবা ট্রাম্পের প্রচারণা দলের কোন সদস্য জ্ঞানত রাশিয়ার সঙ্গে আঁতাত করেছে, এমন প্রমাণ বিশেষ কৌসুলি পাননি।

চিঠির দ্বিতীয় অংশে তদন্ত বাধাগ্রস্ত করা হয়েছিল কি-না সে প্রসঙ্গে আলোকপাত করা হয়েছে। বার তার সার সংক্ষেপে উল্লেখ করেছেন, প্রথা মাফিক রায় দেয়ার ছিল না মুলারের রিপোর্ট। বিশেষ কৌসুলি এ বিষয়ে কোন উপসংহার টানেননি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বার জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট বিচারকার্যে বাধা দিয়েছেন, এমন অভিযোগের পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

মূল রিপোর্ট থেকে আরও তথ্য প্রকাশ করা হবে জানিয়ে বার জানিয়েছেন, কিছু বিষয়ে গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে।

রাজনীতিকরা কী প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন?

ডেমোক্রেট দলীয় নেতৃবৃন্দ পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট ও প্রয়োজনীয় প্রমাণাদি দ্রুত প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন। মুলার শনিবারে ওই রিপোর্ট জমা দেন।

২০১৬ সালের নভেম্বরে মার্কিন নির্বাচনে রুশ সংযোগের বিষয়টি অনেকদিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। নির্বাচনকে প্রভাবিত করে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জেতাতে মস্কো প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েছিল এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

সাবেক এফবিআই পরিচালক জেমস কোমিকে বরখাস্তের পর এই তদন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্টের দিকে মোড় নেয়। তবে ট্রাম্পের পাশাপাশি রাশিয়াও বরাবরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

চলতি মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে তদন্তকারী রবার্ট মুলারের প্রতিবেদন নিয়ে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ৪২০ জন আইনপ্রণেতা কংগ্রেস ও জনগণের কাছে তদন্ত প্রতিবেদনটি উন্মুক্ত করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ওই প্রস্তাবের বিপক্ষে কোনও ভোট পড়েনি। বিবিসি বাংলা।

Scroll to Top