বিস্ফোরক সব তথ্য প্রকাশিত হয়েছে নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক সাংবাদিক ভিকি ওয়ার্ডের লেখা নতুন বইয়ে। ‘কুশনার ইনকরপোরেশন’ নামের বইয়ে তিনি দাবি করেছেন, প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ে ইভানকা ট্রাম্প ভাবেন তিনি হবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। তার প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের রয়েছে সবচেয়ে বেশি দুর্বলতা। ইভানকা ও তার স্বামী জারেড কুশনার ক্ষমতার জন্য উদগ্রিব হয়ে আছেন। তাদেরকে যতটা ক্ষমতাবান দেখা যায় তার চেয়ে তাদের ক্ষমতা অনেক বেশি। বইতে এসব কথা দাবি করা হলেও তা জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে হোয়াইট হাউস।
প্রেস সেক্রেটারি সারাহ স্যান্ডার্স এক বিবৃতিতে বলেছেন, (বইয়ে) প্রকাশিত এসব তথ্য দুঃখজনক। কিন্তু বিস্ময়ের নয় যে, অজ্ঞাত সূত্রের ওপর ভিত্তি করে লেখা একটি বইকে প্রমোট করতে সময় ব্যয় করবে মিডিয়া।
জারেড কুশনার ও ইভানকা ট্রাম্প দেশের জন্য যেসব অবিশ্বাস্য কাজ করছেন তার পরিবর্তে এ বইয়ে তুলে ধরা হয়েছে মিথ্যা তথ্য। এ খবর দিয়েছে নিউজিল্যান্ডের অনলাইন নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড। এতে বলা হয়েছে, অজ্ঞাত ২২০ জন ব্যক্তির সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে ওই বইটি লিখেছেন ভিকি ওয়ার্ড।
তিনি এসব সূত্রকে উদ্ধৃত করে দাবি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছেন। ভিকি ওয়ার্ড লিখেছেন, অনেক মানুষ নোটিশ করেছেন যে, নিয়মিতই ওভাল অফিসে যান ইভানকা। অনেক সময় শিশুসুলভ আচরণ করেন তিনি। ট্রাম্পের সঙ্গে আদুরে কণ্ঠে কথা বলেন। এ সময় তাকে আদর করে ‘বেবি’ সম্বোধন করেন ট্রাম্প অথবা আদর করে পিঠ চাপড়ান। ইভানকা যখন ট্রাম্পের রুম থেকে বেরিয়ে যান, তখন কাজ ফেলে মাঝে মাঝেই তার দিকে তাকিয়ে থাকেন তিনি।
রুমের ভিতর থাকা অন্যদের বলেন, ওকে অনেক সুন্দর লাগছে না? ভিকি ওয়ার্ড এসব মন্তব্য তুলে এনেছেন অজ্ঞাত সূত্র থেকে। কিন্তু নিজের মেয়েকে নিয়ে বিভিন্ন রকম মন্তব্য করার জন্য ট্রাম্প অনেক সময় আলোচিত, সমালোচিত হয়েছেন। কখনও এমন মন্তব্য করেছেন যাতে অন্যদের চোখ আকাশে ওঠে। ‘দ্য ভিউ’কে ২০০৬ সালে তিনি বলেছেন, ‘ইভানকা যদি আমার মেয়ে না হতো, তাহলে সম্ভবত তার সঙ্গে আমি ডেটিং করতাম।’
এর তিন বছর আগে হাওয়ার্ড স্টার্নের রেডিও শোতেও তিনি নিজের মেয়ের সম্পর্কে মন্তব্য করেন। বলেন, তার মেয়ের শরীরটা অন্যদের চেয়ে বেস্ট। তিনি এ সময় ইভানকাকে ‘পিস অব অ্যাস’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। পরে স্টার্ন বলেছেন, নিজের মেয়ে ইভানকা সম্পর্কে ট্রাম্প তাকে বলেছেন, ‘আপনি জানেন কে সবচেয়ে বেশি সুন্দরী? সে হলো আমার মেয়ে ইভানকা।’
নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড লিখেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির সময়কালে তার প্রশাসনের মূল কারিগরদের নেপথ্যে বড় ভূমিকা রাখছেন ইভানকা ও তার স্বামী জারেড কুশনার। কিন্তু ভিকি ওয়ার্ডের মতে, তাদের দু’জনের কেউই ট্রাম্পের জনপ্রিয় নীতি প্রকৃতপক্ষে শেয়ার করেন না। তারা সময়কে ব্যবহার করছেন নিজেদের আধিপত্যকে বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে এবং শক্তিশালী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে নিজেদের উপস্থাপনের চেষ্টা করতে।
একজন ঘনিষ্ঠ সাংবাদিক বলেছেন, তারা দুজন নিজেদেরকে দেখছেন নেটওয়ার্কিং সুযোগ হিসেবে। ভিকি ওয়ার্ডের মতে, তাদের শেষ লক্ষ্য কি? ইভানকা আসলেই নিজে প্রেসিডেন্ট হওয়ার উচ্চাভিলাষ দেখাচ্ছেন। ‘ইভানকা এ সত্যের বিষয়ে কোনোই গোপনীয়তা রাখছেন না যে, তিনি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর নারী হবেন। তিনি বিশ্বাস করছেন, ওয়াশিংটনে তার পিতার শাসন যুক্তরাষ্ট্রে একটি বংশানুক্রমিক শাসন ব্যবস্থার সূচনা’।
হোয়াইট হাউস ছেড়ে যাওয়ার পর গ্যারি কোন বলেছেন, ‘ইভানকা মনে করছেন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন। তিনি মনে করছেন বিষয়টি হবে কেনেডি, বুশ পরিবারের মতো ট্রাম্প পরিবারেরও’।
ইভানকা ও জারেড কুশনারকে শাসনের লজ্জাজনক ব্যক্তি হিসেবে এমএসএনবিসি’কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বর্ণনা করেছেন ভিকি ওয়ার্ড। তিনি বলেছেন, তাদের রয়েছে ব্যক্তিস্বার্থকে প্রাধান্য দেয়ার ব্যতিক্রমী এক প্রবণতা। তিনি এই বইয়ে আরো দাবি করেছেন, ইভানকা ও জারেড কুশনারের সম্পর্ক নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট ছিল না টাম্প ও কুশনার পরিবার।