ভারত-পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণরেখায় তুমুল গোলাগুলি

নতুন করে ভারত-পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণ রেখায় (লাইন অব কন্ট্রোল) গোলাগুলি করেছে দুদেশের সেনারা। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জম্মু ও কাশ্মীরের সীমান্তবর্তী শহর রাজৌরির কাছে এ গোলাগুলি হয়।  ভারতীয় বাহিনীর দাবি, পাকিস্তানি সেনারাই আগে শেল হামলা চালিয়েছে আর তারা এর জবাবে পাল্টা গুলি ছুড়েছে। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে বলে দাবি করছে তারা।

ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল দেবেন্দর আনন্দ দাবি করেছেন, ‘পাকিস্তান তাদের অন্যায় কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে এবং একদিনের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন করেছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নওশেরা ও সুন্দেরবেনি সেক্টরের নিয়ন্ত্রণ রেখায় তারা (পাকিস্তান) গোলাবারুদ নিক্ষেপ এবং ছোটখাটো অস্ত্র দিয়ে গুলি করেছে। ভারতীয় বাহিনী এর প্রতিশোধ নিতেই কঠোর ও কার্যকরভাবে জবাব দিচ্ছে।’

তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।

ইতিমধ্যেই রাজৌরি ও পুঁচ জেলার নিয়ন্ত্রণরেখায় থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে সব স্কুল এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, মাত্র ১০ ঘণ্টার ব্যবধানে আবারও সীমান্ত দিয়ে হামলা শুরু করে পাকিস্তানি সেনারা।  এর আগে বুধবার সকাল সাড়ে ৪টায় কাশ্মীরের রাজৌরি নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর হামলা করে তারা। এতে ভারতীয় এক সেনা আহত হয়েছেন বলে দাবি করে মন্ত্রণালয়টি।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় দেশটির আধা সামরিক সিআরপিএফের গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলায় ৪০ জওয়ান নিহত হন। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মদ এ হামলার দায় স্বীকার করে। এর পর থেকেই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়।

এ ঘটনার ১২ দিন পর ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বালাকোটে বিমান হামলা চালায় ভারত। এর পরদিন দুই দেশের সেনাদের মধ্যে কাশ্মীর সীমান্তে গোলা ও গুলিবিনিময় হয়। আকাশযুদ্ধে ভারত হারায় দুটি যুদ্ধবিমান। তখনই পাকিস্তান বাহিনীর হাতে বন্দী হন ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন। পাল্টাপাল্টি হামলায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চলমান থাকা অবস্থাতেই গত ১ মার্চ আটক পাইলট অভিনন্দনকে মুক্তি দেয় ইসলামাবাদ। এদিন বিকাল থেকেই সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় পরস্পরকে লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ শুরু করে দুই দেশের সেনাবাহিনী।

থেমে থেমে গোলাগুলির ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে বুধবার ভোর সাড়ে চারটা পর্যন্ত সুন্দেরবানি সেক্টরে দুই পক্ষের গোলাগুলি হয়। এর কয়েক ঘণ্টা পরই বুধবার আবারও গোলাগুলির খবর দিলো ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।

Scroll to Top