ভারতীয় বিমানবাহিনীর আটক পাইলটকে মুক্তি দিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ফাতিমা ভুট্টো। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার তিনি এই আহ্বান জানান বলে জানিয়ে সংবাদমাধ্যম পিটিআই।
তিনি লেখক ও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর নাতনি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ভাতিজি।
গতকাল বুধবার ভারতের ওই পাইলটকে আটক করার দাবি করে পাকিস্তান। শুরুতে ভারত অস্বীকার করে। পরে পাকিস্তান ওই পাইলটের ভিডিও প্রকাশ করলে অবিলম্বে তাকে নিরাপদে ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ভারত। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কব্জায় রয়েছেন ওই পাইলট।
নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকার এক নিবন্ধে ফাতিমা ভুট্টো বলেন, ‘আমি এবং পাকিস্তানের তরুণ প্রজন্মের অনেকেই ওই পাইলটের মুক্তি চাই। আমাদের দেশের জনগণের শান্তিপূর্ণ, মানবিক ও মর্যাদাশীল মনোভাবের বহিঃপ্রকাশের জন্য এটি করা জরুরি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের জীবনের অনেকটা সময় সংঘাত আর যুদ্ধের মধ্য দিয়ে কেটেছে। আমি পাকিস্তানি সেনাদের মৃত্যু দেখতে চাই না। আমি ভারতের সেনাদের মৃত্যু দেখতে চাই না। আমরা এতিমদের উপমহাদেশ হতে চাই না।’
জুলফিকার আলী ভুট্টোর ছেলে মুর্তজা ভুট্টোর মেয়ে ফাতিমা বলেন, ‘আমার প্রজন্মের পাকিস্তানিরা বাক স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে। আমরা নৈতিক অধিকার রক্ষা ও শান্তির জন্য আওয়াজ তুলতে ভয় পাই না। তবে দীর্ঘ সেনা শাসন, জঙ্গিবাদ এবং অনিশ্চয়তার ইতিহাস আমাদের। এতে প্রমাণ হয় পাকিস্তানিদের ধৈর্য নেই। ইচ্ছাশক্তি নেই। তারা যুদ্ধংদেহী।’
ফাতিমা আরও বলেন, ‘আমাদের প্রজন্মের বড় একটা অংশ চলমান উত্তেজনার অবসান চায়। আমি কখনো প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আমার দেশের শান্তিপূর্ণ অবস্থান দেখিনি।’
ফাতিমার এমন বক্তব্যের প্রমাণ মেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারেও। গতকাল বুধবার বিকেল থেকে টুইটারে হ্যাশট্যাগ সেনোটুওয়ার ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলায় ভারতের বিশেষায়িত নিরাপত্তা বাহিনী সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) গাড়িবহরে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ৪৪ জওয়ান নিহত হন।
জঙ্গিদের মদত দেওয়ার জন্য ইসলামাবাদকে অভিযুক্ত করে এর মোক্ষম জবাব দিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোরের দিকে পাকিস্তানের বালাকোট শহরে জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদের আস্তানায় হামলা চালায় ভারতীয় বিমান বাহিনী। হামলায় প্রায় ৩০০ জঙ্গি নিহত হয় বলে দাবি করে ভারত। এর একদিন পরই ভারতের দুটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত ও পাইলট অভিনন্দনকে আটক করার দাবি করে পাকিস্তান।