নিউইয়র্কে ৭২তম জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের সংস্কারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের এক সভা শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। রাষ্ট্রনেতারা এ সময় ট্রাম্পের সঙ্গে করমর্দন এবং কথা বলার জন্য সামনে এগিয়ে যান। তাদের সঙ্গে হাই হ্যালো বলেই সামনে এগোতে থাকেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২/৪ জনের ভিড়ের পেছনেই তার সিটের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন শেখ হাসিনা।
এবার ডোনাল্ড ট্রাম্প একজনের এগিয়ে দেয়া করমর্দনের হাত বলা চলে প্রায় উপেক্ষা করেই, সামনে দাঁড়ান শেখ হাসিনার। কুশল বিনিময় করেন শেখ হাসিনা এবং ট্রাম্প দু\’জনই। কি কথা হয়েছে তাদের মাঝে সেটি স্পষ্ট শোনা যায়নি টিভিতে প্রচারিত ফুটেজে। তবে, শেখ হাসিনা তার সঙ্গে কথা বলার সময় হাত নেড়ে, উচিয়ে কোনো শঙ্কা এবং দুঃশ্চিন্তার কথা জানাচ্ছিলেন বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
ডোনাল্ট ট্রাম্পও বেশ কিছুক্ষণ প্রায় ৩০-৫০ সেকেন্ড তার সঙ্গে কথা বলেন, এবং পরবর্তীতে এ নিয়ে আরো কথা বলবেন বলে হাতের ইশারায় বুঝিয়ে দেন। এটি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম সাক্ষাৎ।
২০১৬ সালের নির্বাচনে জয়ের পর, মুসলিম বিশ্বের প্রথম নেতা হিসেবে শেখ হাসিনাই প্রথমে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্বাগত জানিয়ে চিঠি লেখেন। বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। একজন মুসলিম বিদ্বেষী আমেরিকার রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তার উত্থানে সমগ্র মুসলিম বিশ্বেই তখন দ্বিধা এবং সঙ্কোচ। সেটিকে পাশ কাটিয়ে শেখ হাসিনা ট্রাম্পকে চিঠি লেখেন এবং অভিনন্দন জানান। সেটি তখন ব্রিটেনের ইংরেজি দৈনিক দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টসহ অনেক পশ্চিমা পত্রিকার শিরোনাম হয়েছিল।
এবারে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে শেখ হাসিনার দ্বিপাক্ষিক বা সাইড লাইনে কোনো বৈঠকের সূচি নির্ধারিত আছে কিনা এখনও পর্যন্ত পরিষ্কার নয় অথবা নিশ্চিত নয়। তবে, এই যে সৌজন্য সাক্ষাৎ হলো সেখানে ট্রাম্পের সঙেবগ আলোচার ইস্যু উত্থাপন করেছেন বলে আন্দাজ করছেন অনেকেই।
বিশেষত, বাংলাদেশের দক্ষিন পূর্বাঞ্চলের এলাকাগুলোতে, মিয়ানমারের জাতিগত বৈষম্যের শিকার রোহিঙ্গা মুসিলমদের প্রায় নতুন ৪ লক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশ সীমান্তে। ঐ সব উদ্বাস্তু এবং রোহিঙ্গা সমস্যা এরই মধ্যে সিএনএন সহ যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক গণমাধ্যমে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হচ্ছে।
প্রতিদিন সংবাদদাতারা সংবাদ পাঠাচ্ছেন এবং রোহিঙ্গাদের মানবিক দুর্দশা তুলে ধরার সঙ্গে সঙ্গে তারা নাম নিচ্ছেন বাংলাদেশের। যেভাবে বাংলাদেশ তাদের আশ্রয় দিয়েছে সেটি বিশ্ব গণমাধ্যমে ইতিবাচক ভাবেই আলোচিত হচ্ছে। এমন প্রেক্ষিতে, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান এবং তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে দেয়া তার ভাষণে বিশ্ব নেতাদের এবং জাতিসংঘের শক্ত পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করবেন। ট্রাম্পের সঙ্গে এই স্বল্প সময়ের সাক্ষাতে সেই বিষয়টির একটু আলোচনা হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
উল্লেখ্য, এবারের অধিবেশনে অংশগ্রহণ করতে মিয়ানমারের প্রধানমন্ত্রী অং সান সু চি অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
ভিডিওটি দেখুন…
বাংলাদেশ সময় : ১২২৬ ঘণ্টা, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭,
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এ