রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে অবশেষে মুখ খুলেছেন রাখাইনে বর্বরোচিত গণহত্যায় অভিযুক্ত মিয়ানমারের সেনাবাহিনী প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং লাইং। তবে তার বক্তব্য ধৃষ্টতাপূর্ণ এবং ঔদ্ধত্যে ভরা। লাইং দাবি করেছেন, রোহিঙ্গারা কোনোকালেই মিয়ানমারের জাতিগোষ্ঠী ছিল না।
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সশস্ত্র বাহিনীর একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেন নৌ ও বিমান বাহিনী প্রধান ছাড়াও সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে সেনাপ্রধানের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি পোস্টও করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে জেনারেল লাইং বলেন, আইন মেনে যথাযথভাবে কর্ম-কর্তব্য পালন করতে হবে। মিয়ানমারের সব নাগরিককে তাদের দেশের স্বার্থে এক হতে হবে। গণমাধ্যমকেও এক হতে হবে।
সশস্ত্র বাহিনীকে দেশের উন্নয়নের স্বার্থে লড়াই করতে এবং মিয়ানমারের সব নাগরিককে এই লড়াইয়ে অংশ নেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের পেছনের মূল হোতা হিসেবে অভিযুক্ত এই সামরিক জান্তা বলেন, তারা (বিশ্ব সম্প্রদায়) রোহিঙ্গাদের স্বীকৃত চায়। অথচ রোহিঙ্গরা কখনোই মিয়ানমারের জাতিগোষ্ঠী ছিল না। বাঙালি ইস্যু জাতীয় বিষয় এবং আমাদের উচিত ‘সত্য’ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হওয়া।
সিনিয়র জেনারেল লাইং রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করার পর সেখানে অন্য জাতিগোষ্ঠীর লোকদের দখলবাজিতে উৎসাহিত করে বলেন, স্থানীয় জাতিগোষ্ঠীকে রাখাইনের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় বড় অংশীদারিত্ব থাকতে হবে। সশস্ত্র বাহিনীকে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ সার্বিক সহযোগিতা দিতে হবে।
পশ্চিমা মানবাধিকার সংগঠনগুলো মনে করে, মিয়ানমারে স্টেট কাউন্সেলর (কার্যত সরকারপ্রধান) অং সান সু চিকে কথিত গণতান্ত্রিক সরকারের পুতুলপ্রধান করে রেখে মূলত গণহত্যায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন কুখ্যাত এই সেনাপ্রধান। তার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কাচিন ও শান রাজ্যেও গণহত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলছে জাতিসংঘে।
পুলিশের ওপর হামলার অজুহাতে মিয়ানমার সরকার সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের কথা বললেও জাতিসংঘ বলছে, গত ২৫ আগস্টের ওই ঘটনার পর থেকে সেখানে জাতিগত নিধন চলছে। এই নিধনযজ্ঞে এখন পর্যন্ত ৩ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছে। স্বদেশ ছেড়ে কেবল বাংলাদেশেই শরণার্থী হতে বাধ্য হয়েছে প্রায় সোয়া ৪ লাখ মানুষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসডিএম