মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর গণহত্যা ও অবর্ণনীয় অত্যাচার নিয়ে বিশ্ববিবেক তোলপাড়। কিন্তু রাখাইন রাজ্যের সহিসংতায় মিয়ানমারের পক্ষেই অবস্থান নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সম্প্রতি তিন দিনের মিয়ানমার সফরে মোদি জানিয়েছেন, রাখাইনে ‘জঙ্গি সহিংসতা’ রুখতে তার সরকার সর্বোত্তমভাবে মিয়ানমার সরকারকে সাহায্য করবে।
এই ঘোষণার পরপরই মিয়ানমার থেকে উৎখাত হওয়া যে সব রোহিঙ্গা মুসলিম ভারতে ঢুকেছেন, তাদের ‘পুশব্যাক’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। রাজ্যগুলোকে এই নীতি মেনে চলতে বলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু সেই ফরমান মানতে নারাজ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
রাজ্য সরকারের শীর্ষ মহল জানিয়েছে, `নির্যাতিত রোহিঙ্গারা এ রাজ্যে থাকতে চাইলে মানবিকতার খাতিরেই
তাদের থাকতে দেয়া হবে। কোনও অবস্থাতেই জোর করে ফেরত পাঠানো হবে না। রোহিঙ্গারা মুসলিম বলেই কেন্দ্র এমন অবস্থান নিচ্ছে। কিন্তু কেন্দ্র অমানবিক হলেও আমরা তা হতে পারব না।`
মিয়ানমার সরকারের দমন পীড়নের মুখে গত কয়েক বছর ধরে কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা সে দেশ ছেড়ে নৌকা করে বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিচ্ছেন। গত ২৫ অাগস্ট থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ায় সেই সংখ্যাটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতে ইতিমধ্যেই আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা। তাদের মধ্যে প্রায় ১০ হাজার জম্মু লাগোয়া এলাকায় রয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গে রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা তেমন নয়। বনগাঁ-বসিরহাট সীমান্ত এবং উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু এলাকা দিয়ে কিছু রোহিঙ্গা এ রাজ্যে ঢুকেছেন। ধরা পড়ার পরে তাদের অনেকেই এখন কারাগারে। অসম-দাঙ্গার পর উত্তরবঙ্গেও বেশ কিছু রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এদের কাউকেই ‘পুশব্যাক’ করা হবে না বলে সরকারি স্তরে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/কেএসপি