আইএসের ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসা দুই তরুণীর গল্প

ইসলামিক স্টেটের (আইএস) কবল থেকে বের হয়ে এসে নতুন ধারার একটি প্রার্থনা কর্ম শুরু করেছেন ইরাকের দুই তরুণী।

ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের মানুষদের জন্য একটি পবিত্র স্থান ইরাকের লালিশ। সেখানেই তারা এ চর্চা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়।

মূলত ওই তীর্থস্থানে বয়ষ্ক একজন তরুণীদের শরীরে পানি ছিটিয়ে দিয়ে থাকেন; যাতে মনে হয় শরীর থেকে ধুয়ে মুছে যাচ্ছে সব ধরনের অপবিত্রতা।

বিবিসি বলছে, ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের প্রায় ছয় হাজার নারীকে বিভিন্ন সময় ধরে আটকে রেখেছিল আইএস জঙ্গিরা। ইমান ও শিরিনও তাদের মধ্যে দুইজন। তারাও পার করে এসেছে সেই দুঃসময়।

ইরাকের উত্তরাঞ্চলে ২০১৪ সালের অগাস্টে প্রথম আইএস তাদের গ্রামে আক্রমণ করেছিল। আর তারা পালিয়ে আসতে পেরেছে অল্প কিছুদিন আগে। এরপর তারা যান লালিশে, উদ্দেশ্য প্রার্থনায় সব কালিমা থেকে মুক্ত হওয়া। এর মাধ্যমে তারা চাইছেন তাদের জীবনকে পুনর্গঠন করা ও সবকিছু নতুন করে শুরু করতে।

ইমান আইএসের নির্যাতনের কথা স্মরণ করে বলেন, আমরা প্রত্যেক নারী ও শিশুরএকেকটি গল্প রয়েছে। যা আসলে ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের হাতে বন্দি থাকার সময়কার। খারাপ সবকিছুই তারা আমাদের সাথে করেছে।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি এই যে, গিট বাঁধতে লালিশে টাই নিয়ে যাই তাতে করে অন্য কোথাও কোন অশুভ শক্তি হেরে গেল এবং আমাদের স্বপ্নগুলো একদিন সত্যি হবে।

ইয়াজিদিদের প্রার্থনার দেবতা আর তাদের ভক্তির জায়গা হলো একটি ময়ূর দেবতা। আইএস জঙ্গিরা তাদের নির্যাতনকে বৈধতা দিতে চেয়েছিল এমনটি বলে যে, ইয়াজিদিরা শয়তানের উপাসনা করে।

ইমান বলেন, আমাদের ধর্ম অত্যন্ত ভালো, এটি ক্ষমা আর মহত্ত্বে পরিপূর্ণ। আমি জানি দাসত্ব, হত্যা আর রক্তের চেয়ে অন্য যে কোন ধর্মই মহান আর সেরা।

যদিও যুদ্ধে আইএসের পরাজয় হয়েছে কিন্তু ভয় কাটেনি ইয়াজিদিদের। বিশ্লেষকরা বলছেন এখনো অন্তত ৩০০০ ইয়াজিদি নারী আটকে আছেন বিভিন্ন জায়গায়, যাদের অনেকেই যৌনদাসী কিংবা শিশু সৈনিক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৮ ঘণ্টা, ৩১ আগস্ট ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসডিএম