ইসরায়েলি বিমান বাহিনী দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। সীমান্ত থেকে ছোড়া রকেট হামলার জবাবে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
গাজার যুদ্ধের পর ১৩ মাস ধরে সীমান্তে পাল্টাপাল্টি হামলা চলে আসছিল। গত সেপ্টেম্বরে ইসরায়েল বড় ধরনের অভিযান চালিয়ে হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতৃত্বকে দুর্বল করে দেয়।
ইসরায়েল জানায়, পাঁচটি রকেট ছোড়া হলে তাদের বিমান বাহিনী তিনটি প্রতিহত করে, বাকিগুলো লেবাননে পড়ে। এরপর প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ‘ডজনের বেশি সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার’ নির্দেশ দেন।
ইসরায়েলি হামলার পর লেবাননের সামরিক বাহিনী জানায়, তারা লিতানি নদীর উত্তরের এলাকায় তিনটি রকেট লঞ্চার উদ্ধার ও নিষ্ক্রিয় করেছে। তবে এই রকেট হামলার জন্য কে দায়ী, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
হিজবুল্লাহও এখন পর্যন্ত কোনো দায় স্বীকার করেনি। সিএনএন হিজবুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী ইউনিফিল (UNIFIL) জানিয়েছে, এই আকস্মিক সংঘর্ষ নতুন করে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলতে পারে, যা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অর্জিত শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি স্বরূপ। তারা উভয় পক্ষকে সংঘর্ষ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং বলেছে, ‘অতিমাত্রায় উত্তেজনা পুরো অঞ্চলে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।’
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ সরাসরি লেবানন সরকারকে দায়ী করে বলেছেন, উত্তর ইসরায়েলের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যা কিছু করা প্রয়োজন, আমরা তা করব। তিনি আরও বলেন, গ্যালিলি অঞ্চলের বাসিন্দাদের আমরা নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, এবং আমরা তা নিশ্চিত করব।
লেবাননের প্রেসিডেন্ট দপ্তর এ হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, দেশকে আবারও সহিংসতার চক্রে টেনে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন সেনাবাহিনীকে নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং হামলার তদন্ত চালিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে ইসরায়েল এখনো লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে সেনা মোতায়েন রেখেছে। যদিও গত বছরের নভেম্বরে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী তাদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা ছিল।
এই উত্তেজনা এমন এক সময় সৃষ্টি হয়েছে, যখন ইসরায়েল গাজায় নতুন করে সামরিক অভিযান শুরু করেছে। জানুয়ারির পর প্রথমবারের মতো এত বড় মাত্রায় হামলা চালানো হলো, যা সাম্প্রতিক শান্তি চেষ্টাকে ব্যাহত করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।