২০২৩ সালে শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধ থামানো যায়নি এখনও। বরং এ সংঘাতকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল হয়েছে পুরো মধ্যপ্রাচ্যই। এপ্রিলে সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাসে হামলা চালায় ইসরায়েল। প্রাণ হারান আইআরজিসি’র এক কমান্ডারসহ বেশ কয়েকজন। জবাবে, ইসরায়েলে প্রায় ৩শ’ ড্রোন আর মিসাইল ছোড়ে ইরান। কয়েক যুগের মধ্যে সেটিই ইরানের প্রথম ইসরায়েলে সরাসরি হামলা।
এরপর হেলিক্প্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম রইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দোল্লাহিয়ান। তাদের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আরও জটিল হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া, ইয়াহিয়া সিনওয়ার এবং হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভে পরিণত হয় মধ্যপ্রাচ্য।
গাজা-লেবানন দুই ফ্রন্টে একসাথে যুদ্ধ শুরু করে নেতানিয়াহু প্রশাসন। তবে, হামাসের সাথে যতটা দাপটের সাথে লড়তে পেরেছে আইডিএফ, হিজবুল্লাহ’র বেলায় তা পারেনি। গোষ্ঠীটির তুমুল প্রতিরোধের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয়। এমনকি যুদ্ধবিরতিতেও রাজি হতে হয় ইসরায়েলি প্রশাসনকে। যেখানে গাজায় এখনও পৌঁছানো সম্ভব হয়নি কোনো চুক্তিতে।
শুধু হিজবুল্লাই নয়, গাজায় আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই বেশ সরব প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে হুতি বিদ্রোহীরাও। ৭ অক্টোবরের পর থেকেই লোহিত সাগরে ইসরায়েল ও এর মিত্রদের জাহাজে আক্রমণ করে আতঙ্ক তৈরি করে রেখেছে তারা। গোষ্ঠীটির স্পষ্ট হুঁশিয়ারি- মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের দৌরাত্ম্য বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত থামবে না তারা।
লোহিত সাগরে হুতি হামলার হাত থেকে পণ্যবাহী ও সামরিক জাহাজ বাঁচাতে পশ্চিমারা গড়ে তোলে বিশেষ এক নৌ টাস্কফোর্স। বহুবার ইয়েমেনি ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েও দমন করতে পারেনি হুতি বিদ্রোহীদের। সম্প্রতি, হুতি নির্মূলের ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীও।
গাজা-লেবানন-ইয়েমেন ছাড়াও ২০২৪ সালে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির গতিপথে বড় প্রভাবকের ভূমিকায় আবির্ভূত হয়েছে সিরিয়া। বিদ্রোহীদের মাত্র ১১ দিনের অভিযানে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন দেশটির দুই যুগের শাসক বাশার আল আসাদ। সিরিয়ার নাগরিকদের জন্য অভূতপূর্ব জয় বলা হলেও ইরান ও এর প্রতিরোধ বলয়ের জন্য আসাদের পতনকে বড় ক্ষতি হিসেবেই আখ্যা দেয়া হচ্ছে। এদিকে, আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়াতেও আগ্রাসন শুরু করেছে ইসরায়েল।
বছরজুড়েই দেশ এবং দলের মধ্যেই বিরোধীতার মুখে পড়েন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী। এ বছরই প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।