পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে পাকিস্তানে তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) ডাকা কর্মসূচি ঘিরে উত্তাল দেশটির বিভিন্ন এলাকা। রাস্তায় নামা হাজারো সমর্থকের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ব্যাপক সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যেই মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) চারজন নিরাপত্তা সদস্যসহ ৫ জন নিহত হয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রীনগর মহাসড়কে কিছু দুষ্কৃতকারী রেঞ্জার্স কর্মীদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় চারজন প্যারাট্রুপার ও একজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও পাঁচ প্যারাট্রুপার ও দুই পুলিশ সদস্য।
নিরপত্তা সূত্রগুলো বলেছে, চলমান বিক্ষোভ ঘিরে সংঘাতে গত দুই দিনে শতাধিক পুলিশ আহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
নির্বাচনে গণরায় চুরি, বেআইনি গ্রেফতার এবং সংবিধানের ২৬তম সংশোধনীর প্রতিবাদে ১৩ নভেম্বর এই বিক্ষোভের ডাক দেন কারাবন্দি ইমরান খান। পিটিআইএর এই কর্মসূচিকে বেআইনি ঘোষণা করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট।
চলমান পরিস্থিতিতে নিরাপত্তাঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে ইসলামাবাদে সংবিধানের ২৪৫ ধারা সক্রিয় করে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি অশান্ত করার যেকোনো চেষ্টা ও জঙ্গি তৎপরতা কঠোর হাতে দমন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এমনকি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শুট অ্যাট সাইট’ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
শ্রীনগর মহাসড়কের ওই ঘটনায় একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলেও সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে। পাঁচটি মরদেহ স্থানীয় পিআইএমএস হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। হাসপাতালে থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
ইসলামাবাদ অভিমুখী গাড়িবহরে রয়েছেন খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুর ও ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি। ইসলামাবাদের ডি চক এলাকায় তাদের বিক্ষোভ করার কথা রয়েছে।
এদিকে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকবি বলেছেন, ইসলামাবাদের ‘রেড জোনে’ প্রবেশ করলে ইমরান খানের সমর্থকদের গ্রেফতার করা হবে। সরকারি ভবনের সুরক্ষায় ওই এলাকায় চলাচল নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। যে কেউ ওই এলাকায় এলেই গ্রেফতার করা হবে।
ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে চলমান বিক্ষোভের জেরে দুদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে পাকিস্তানজুড়ে। বিক্ষোভকারীদের আটকে দেয়ার লক্ষ্যে ইসলামাবাদের আশপাশের সব মহাসড়কে তৈরি করা হয়েছে ব্যারিকেড। এরই মধ্যে পিটিআইয়ের পাঁচ এমপিসহ চার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।