কমলা হ্যারিস নতুন ইতিহাস গড়তে পারবেন?

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে কোনো নারী প্রেসিডেন্ট নেই। এবার ডেমোক্র্যাটিক পার্টি থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কমলা হ্যারিস। যুক্তরাষ্ট্রের ভোটাররা কোনো নারীকে প্রেসিডেন্ট পদে যাওয়ার সুযোগ দেবে কিনা তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে কমলা হ্যারিসকে গ্রহণ করতে প্রস্তুত মার্কিন ভোটাররা। নির্বাচনী প্রচারণার সময় এক সাক্ষাৎকারে এমনই আশার কথা বলেছেন ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিস। তবে কি এবার সত্যিই ইতিহাস গড়তে যাচ্ছেন কমলা?

আগাম সব জরিপেই এক-দুই পয়েন্টের ব্যবধানে হলেও এগিয়ে আছেন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী এই নারী। কিন্তু ইতিহাস বলছে ভিন্ন কথা। ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগের রাতে নিউইয়র্ক টাইমসের জরিপ অনুযায়ী হিলারি ক্লিন্টনের জয়ের সম্ভাবনা ছিল প্রায় ৯১ শতাংশ।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেসময় ভোটের হিসাব অনুযায়ী মাত্র কয়েক হাজার ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে থাকা হিলারি, ট্রাম্পের কাছে ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটে হেরে যান।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি চলিত প্রবাদ আছে, হোয়াইট হাউজ শুধুমাত্র পুরুষদের জন্য বরাদ্দ। প্রেসিডেন্ট হওয়া তো দূরের কথা নির্বাচনেও অংশ নিতে পারতেন না মার্কিন নারীরা।

যুক্তরাষ্ট্রের নারীরা ভোটাধিকার পান ১৯২০ সালে। ১৯৬০-এর দশকের শেষ দিকে একটু একটু করে বৈষম্যের বিরুদ্ধে নারী আন্দোলন দানা বাধতে শুরু করে। এই আন্দোলন ছিল মূলত চাকরি ক্ষেত্রে ও রাষ্ট্রপ্রণীত আইনে পুরুষের সমান অধিকার আদায়ের আন্দোলন। তারপর অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে নারী উপস্থিতি বাড়েনি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শতাব্দী পর শতাব্দী ধরে চলে আসা নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই মার্কিনদের নারী প্রেসিডেন্সির ওপর আস্থা নেই।

জর্জ টাউন ইউনিভার্সিটির এক জরিপ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আটজনের মধ্যে একজন মার্কিন নারীদের মানসিকভাবে দুর্বল মনে করেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে যে গুরু দায়িত্ব পালন করতে হয় তা নারীরা দৃঢ়তার সাথে করতে পারবেন না বলে মনে করেন তারা। সত্তর দশকের শার্লি চেজম থেকে শুরু করে ২০১৬ সালের হিলারি ক্লিন্টনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ পর্যন্ত একই ঘটনার সাক্ষী হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ ট্রাম্পের মত একজন বর্ণবাদী, অসহনশীল ব্যক্তিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেনে নিলেও একজন নারীকে মেনে নেবে না। প্রায় আড়াই’শ বছর পুরানো ইতিহাসের ব্যতিক্রম ঘটিয়ে কমলার হাত ধরে নতুন এক সূচনার অপেক্ষায় মার্কিন নারীরা।

Scroll to Top