লেবাননের সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরাইল। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানী বৈরুতে দফায় দফায় এ হামলা চালানো হয়।
হিজবুল্লাহর সদর দফতর লক্ষ্য করে চালানো এ হামলায় সংগঠনটির প্রধান হাসান নাসরুল্লাহর নিহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও কোনো পক্ষ থেকেই তার জীবিত অথবা নিহতের বিষয়ে তথ্য নিশ্চিত করা হয়নি।
শুক্রবারের ব্যাপক বোমা হামলার পর নাসরুল্লাহর ভাগ্য সম্পর্কে তাৎক্ষণিক কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, হিজবুল্লাহ প্রধান বেঁচে আছেন এবং ভালো আছেন।
হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করা হয়েছে কিনা ইসরাইলের পক্ষ থেকেও কিছু বলা হয়নি। তবে একজন সিনিয়র ইসরাইলি কর্মকর্তা বলেছেন, হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।
হামলার কয়েক ঘণ্টা পার হওয়ার পরও হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের প্রধানের অবস্থান জানিয়ে কোন বিবৃতি দেয়া হয়নি।
ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, নিরাপদে আছেন হিজবুল্লাহপ্রধান। ইরানের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, তেহরান তার অবস্থান জানার চেষ্টা করছে।
নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ইসরাইলি কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ‘নাসরুল্লাহ মারা গেছেন এমন মন্তব্য করার সময় আসেনি।’
ইসরাইলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিটের কমান্ডার মোহাম্মদ আলী ইসমাইল এবং তার ডেপুটি হোসেইন আহমেদ ইসমাইলকে হত্যা করেছে।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় দক্ষিণাঞ্চলীয় হারিত রিক এবং দাহিয়েহ এলাকা লক্ষ্য করে কমপক্ষে ১৫টি মিসাইলসহ নতুন ধরনের বোমা ছোঁড়ে তেল আবিব। বাংকার বাস্টার নামক এই বোমার ওজন প্রায় ৫ হাজার পাউন্ড। যার আঘাতে পুরোপুরি মাটিতে মিশে যায় অন্তত ডজনখানেক আবাসিক ভবন।
ইসরাইলি বাহিনীর দাবি, হিজবুল্লাহর মূল হেডকোয়ার্টার লক্ষ্য করে বোমা ফেলা হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের দাবি, টার্গেটে ছিলেন হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ।
আইডিএফ মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগারি বলেছেন, হিজবুল্লাহর সক্ষমতা আর তাদের কমান্ডারদের নিশ্চিহ্ন করতে ইসরাইলি বাহিনী তাদের হেডকোয়ার্টার লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। যেটি দক্ষিণ লেবাননের আবাসিক এলাকায় অবস্থিত। আমাদের এই হামলা নির্ভুল এবং সুনির্দিষ্ট ছিল।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জাতিসংঘ ভাষণে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করার পর বৈরুতে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর এই তুমুল বিমান হামলা শুরু হয়। গত বুধবার লেবাননে তিন সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা। তবে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরাইল।