ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ড্রোন, রকেট হামলা ও বন্দুকযুদ্ধের ফলে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ছয়জন। সরকার পতনের দাবি তুলে মণিপুরে দাবানলে রূপ নিয়েছে আন্দোলন।
গত মে মাস থেকে কুকি ও মেইতে জনজাতির সংঘাতে উত্তাল মণিপুর। দফায় দফায় সংঘর্ষে দুশ’র বেশি মানুষের প্রাণ ঝরেছে। কিন্তু গত এক সপ্তাহের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। মুখোমুখি সংঘর্ষের পরিবর্তে কুকি ও মেইতেদের জঙ্গি সংগঠনগুলো আকাশপথে হামলা শুরু করেছে।
প্রথমে ড্রোন থেকে বোমা হামলা করা হয়। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) মণিপুরের সাবেক এক মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি লক্ষ্য করে রকেটচালিত বোমা হামলা করা হয়। ওই দিন ইম্ফলে মণিপুর রাইফেলসের অস্ত্র লুটের চেষ্টা করে একদল দুষ্কৃতকারী। শনিবার দুপক্ষই রকেট ছোড়ে। তাতে দুপক্ষের আটজন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
আজ সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, মণিপুরের শিক্ষার্থীরা সিআরপিএফ জওয়ানদের গাড়িতে হামলা চালিয়েছে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের পদত্যাগের দাবিতে ইম্ফলে তার বাড়ি ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছে ছাত্র-জনতা। রাজধানীর কয়েক জায়গায় অভিযান শুরু হয়েছে। ঘেরাওয়ের ডাক দেয়া হয়েছে রাজভবনও। পরিস্থিতি সামাল দিতে গত কয়েকদিনে একাধিকবার রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে পরামর্শ করছেন মুখ্যমন্ত্রী বীরেন।
পশ্চিমবঙ্গের ৩৩ দিন যাবত আন্দোলন-বিক্ষোভের জেরে সংকট ও অস্বস্তিতে পড়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। এর মধ্যেই মণিপুরে দ্বিতীয় দফায় সংঘর্ষ-আন্দোলনে জেরবার মণিপুর সরকার। দুই সংঘাতের জেরে চরম উৎকণ্ঠায় দিল্লি।
মণিপুরে বিজেপিশাসিত সরকার থাকলেও পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিবিরোধী শক্তি সরকারের ক্ষমতায় রয়েছে। সেক্ষেত্রে দুই রাজ্যে দুইভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করছে মোদি সরকার। ভাঙচুর, সহিংসতা, লুটপাট ঠেকাতে মণিপুরের সব জায়গায় ভারতের সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ) ও সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে কেন্দ্রীয় সরকার সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে মণিপুর সরকারকে।