ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেছেন, ‘বাংলাদেশের প্লাবন রোধে ও পানি বণ্টন নিয়ে ওই দেশের নতুন মেকানিজমের প্রস্তাব বিবেচিত হতে পারে।’
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
এ ছাড়া বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতির জন্য সম্প্রতি অনেকে ভারতকে দায়ী করেছে। এ নিয়ে বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ভারতবিরোধী প্রচার চলছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গত ২২ আগস্ট বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেন। সেই সাক্ষাতে বন্যা পরিস্থিতি সামাল দেওয়া ও পানিবণ্টন নিয়ে ড. ইউনূস কিছু প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সীমান্ত ব্যবস্থাপনা নিয়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে যে ধরনের বোঝাপড়া ও ‘মেকানিজম’ (ব্যবস্থা) রয়েছে, সেই অনুযায়ী অভিন্ন নদীর পানি ব্যবস্থাপনা ও বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে উদ্যোগী হওয়ার প্রস্তাব তিনি দিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেন, দুই দেশের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে। তাদের পানিসম্পদ ব্যবহার, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বহুদিন ধরেই স্বীকৃত কিছু ‘মেকানিজম’ রয়েছে। এ ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা আছে। সে অনুযায়ী বাংলাদেশকে ভারত নিয়মিতভাবে ঠিক সময়ে সব তথ্য সরবরাহ করে।
তিনি বলেন, ‘নতুন কোনও মেকানিজম বা ব্যবস্থার প্রস্তাব প্রচলিত ব্যবস্থার উন্নতি ঘটালে ও মানুষের দুর্দশা কমাতে পারলে তা নিয়ে দুই দেশ আলোচনা করতেই পারে। বিবেচিত হতেই পারে।’
এবারের বন্যা মানবসৃষ্ট ও ইচ্ছাকৃত বলে অনেক প্রচার বাংলাদেশে চলেছে। এ বিষয়ে মুখপাত্র বলেন, ‘ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে অভাবিত বন্যার পর ভারত দুটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে বন্যার কারণ কী, তা বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বন্যার কারণ প্রবল বৃষ্টি। ভারত ইচ্ছা করে বাংলাদেশকে বানভাসি করেনি।’
ব্রিফিংয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল, ভারতে থাকার মেয়াদ, তৃতীয় দেশের যাওয়া কিংবা তাকে প্রত্যাবর্তনের সরকারি অনুরোধ বাংলাদেশ থেকে এসেছে কি না, এ বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়। মুখপাত্র জয়সোয়াল এ নিয়ে কিছুই প্রায় বলতে চাননি। তিনি শুধু জানান, নিরাপত্তার কারণে হাসিনা স্বল্প সময়ের নোটিশে ভারতে এসেছেন। তা ছাড়া ভারত কখনো অনুমানমূলক প্রশ্নের উত্তর দেয় না।
এ ছাড়া ভিসা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র জয়সোয়াল বলেন, এখন জরুরি প্রয়োজন ও চিকিৎসার জন্য ভিসা দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুরোদমে ভিসা দেওয়া হবে।
তবে বাংলাদেশের বন্যায় ত্রাণ পাঠাতে ভারত উদ্যোগী হবে কি না, জানতে চাওয়া হলে মুখপাত্র বলেন, ভারতের হাইকমিশনার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বলে জানান তিনি।