আজ মঙ্গলবার বিশ্ববাজারে মার্কিন ডলারের বিনিময়মূল্য সাত মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ আগামী মাস, অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকে নীতি সুদ কমাবে, এমন ধারণা থেকে ডলারের বিনিময়মূল্য কমছে। আগামী শুক্রবার ফেড চেয়ারম্যান এ বিষয়ে কিছু বলবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
এদিকে ডলারের বিনিময়মূল্য কমে যাওয়ায় ইউরো কিছুটা শক্তিশালী হয়েছে। ইউরোর মান এখন চলতি বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। অন্যদিকে ব্রিটিশ মুদ্রা পাউন্ড স্টার্লিংয়ের বিনিময়মূল্যও গত এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। এ ছাড়া ইমার্জিং মার্কেট কারেন্সি ইনডেক্স রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, জাপানি মুদ্রা ইয়েনের দরও বেড়েছে; প্রতি ডলারের বিপরীতে এখন ১৪৬ দশমিক ৫০ ইয়েন পাওয়া যাচ্ছে। ফলে গত দুই সপ্তাহের মধ্যে ইয়েনের দর এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে।
শুক্রবার ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল এক বক্তৃতা দেবেন। বিনিয়োগকারীরা এখন সেদিকে তাকিয়ে আছেন। অধিকাংশ বিনিয়োগকারী আশা করছেন, জেরোম পাওয়েল সুদ কমানোর বিষয়ে কিছু বলবেন। বিনিয়োগকারীরা তাঁর কথা থেকে আন্দাজ করতে চান, আগামী মাসে ফেড সুদহার ঠিক কতটা কমাবে—২৫ ভিত্তি পয়েন্ট নাকি ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট।
অস্ট্রেলিয়ার কমনওয়েলথ ব্যাংকের আন্তর্জাতিক অর্থনীতি বিভাগের প্রধান জোসেফ কাপুরসো রয়টার্সকে বলেন, পাওয়েল হয়তো কিছু সুযোগ হাতে রেখে দেবেন; বিষয়টি নির্ভর করবে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি ও কর্মসংস্থানের পরিসংখ্যানের ওপর। এমনও হতে পারে, তিনি সেপ্টেম্বরে কিছু না করে বছরের শেষ ভাগে বড় ধরনের হ্রাস করবেন।
জোসেফ কাপুরসো আরও বলেন, ‘আমাদের দৃষ্টিতে এখন যে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে ২৫ ভিত্তি পয়েন্ট সুদ কমানো হবে যথাযথ। এর চেয়ে বেশি কমানো এখনই ঠিক হবে না।’ তিনি আরও বলেন, চলতি সপ্তাহে ডলারের বিনিময়মূল্য আরও কমবে।
আজ প্রতি ইউরোর বিপরীতে ১ দশমিক শূন্য ৮ ডলার পাওয়া গেছে, গত বছরের ২৮ ডিসেম্বরের পর যা সর্বোচ্চ। চলতি মাসে এখন পর্যন্ত ইউরোর দর বেড়েছে ২ দশমিক ৪ শতাংশ। ফলে গত নভেম্বরের পর চলতি আগস্ট মাস হতে যাচ্ছে ইউরোর সবচেয়ে পয়মন্ত মাস।
সকালের পাউন্ডের বিনিময়ে হার স্থিতিশীল ছিল; প্রতি পাউন্ডের বিনিময়ে পাওয়া গেছে ১ দশমিক ২৯ ডলার। এদিকে ডলার ইনডেক্স গত ২ জানুয়ারির পর সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। আজ ডলার ইনডেক্সের মান দাঁড়িয়েছে ১০১ দশমিক ৮২। এই সূচকের মান চলতি মাসে ২ শতাংশের বেশি কমেছে। এ নিয়ে টানা দুই মাস এই সূচকটি নিম্নমুখী থাকছে।
বাজারের নিয়ম হলো, নীতি সুদহার বাড়লে ডলারের বিনিময় হার বাড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের নীতি সুদ বাড়লে বন্ডের সুদহারও বেড়ে যায়। ফলে সারা বিশ্বের বিনিয়োগকারীরা তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডলারভিত্তিক বন্ড কেনায় ঝুঁকে পড়েন। ফলে ডলারের চাহিদা বাড়ে। তখন তার বিনিময়মূল্যও বাড়ে।