যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী শিবির গতকাল মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছে। এতে দাবি করা হয়, আইনত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্বাচনী তহবিলের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেন না কমলা হ্যারিস।
রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নির্বাচনী-দৌড়ে বেশ পিছিয়ে পড়েছিলেন ৮১ বছর বয়সী ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেন। বিশেষ করে প্রথম বিতর্ক খারাপ করার পর দলের ভেতর থেকে তাঁর সরে যাওয়ার দাবি ওঠে। এমন পরিস্থিততে গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন বাইডেন। তাঁর স্থলে দলের প্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিসের প্রতি সমর্থন জানান তিনি।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থিতার জন্য গত সোমবার রাতে ডেমোক্রেটিক পার্টির বেশির ভাগ ডেলিগেটের (দলের প্রতিনিধি) সমর্থন লাভ করেন কমলা হ্যারিস। এরপর খুব দ্রুত বাইডেনের নির্বাচনী তহবিলের সব ব্যাংক হিসাবের নিয়ন্ত্রণ যায় তাঁর কাছে।
কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী শিবির বলছে, আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় দলের জাতীয় সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হতে যাচ্ছেন তিনি।
ট্রাম্পের নির্বাচনী শিবিরের অভিযোগ, কমলা হ্যারিস নির্লজ্জভাবে বাইডেনের নির্বাচনী তহবিলের অর্থের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার শিবিরের জেনারেল কাউন্সেল ডেভিড ওয়ারিংটন এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগপত্রের একটি কপি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া হয়েছে। এতে ওয়ারিংটন দাবি করেন, ‘আমেরিকার ইতিহাসে নির্বাচনী প্রচারাভিযানে সবচেয়ে বড় আর্থিক অনিয়ম করতে যাচ্ছেন হ্যারিস।’
একটি পর্যবেক্ষক দলের প্রচারাভিযান-বিষয়ক আইনি কেন্দ্রের আইনজীবী সৌরভ ঘোষ বলেন, কমলা হ্যারিস যেহেতু বাইডেনের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ও রানিং মেট হিসেবে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন, তাই তহবিলের ওই অর্থের ওপর তাঁর দাবি নিশ্চিত করা উচিত।
তবে অভিযোগ দায়ের করা হলেও ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের আগে বিষয়টি সমাধান করতে পারবে না নিয়ন্ত্রক সংস্থা। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন জানায়, অমীমাংসিত বিষয়টি নিয়ে তারা এখনই কোনো মন্তব্য করবে না।
কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী শিবির বলছে, গত রোববার বাইডেন নির্বাচনে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ান এবং কমলা হ্যারিসকে নির্বাচনে দলের প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেন। এর পর থেকে এ পর্যন্ত অল্প সময়ের ব্যবধানে ১০ কোটি ডলারের তহবিল সংগ্রহ করেছে হ্যারিসের নির্বাচনী শিবির, যা বাইডেনের তহবিলের বিদ্যমান অর্থের চেয়ে বেশি। গত জুন পর্যন্ত বাইডেন নির্বাচনী তহবিলের জন্য ৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার সংগ্রহ করেছিলেন।
কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে রিপাবলিকানদের দায়ের করা অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী শিবির। তাদের মুখপাত্র চালর্স ক্রিশমার লুটভাক বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর বৃহৎ জোটকে হারানোর লক্ষ্যে শক্তি সঞ্চয় করায় রিপাবলিকানরা হয়তো হিংসাত্মক হয়ে পড়েছেন।
চার্লস ক্রিশমার আরও বলেন, ‘তাঁরা ভোটারদের দমন ও নির্বাচনকে নিজেদের পক্ষে নিতে বছরের পর বছর ধরে এ ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ করে আসছে, যা তাদের শুধু বিভ্রান্তই করবে। আমরা স্বেচ্ছাসেবীদের নিবন্ধিত করছি, ভোটারদের সঙ্গে কথা বলছি এবং এই নির্বাচনে আমরাই জিতব।’