ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ৯ মাসেরও বেশি সময় ধরে অব্যাহত ইসরাইলি হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে অন্তত ১৫ বছর সময় লাগবে। এ জন্য প্রতিদিন ১০০টি লরি ব্যবহার করতে হবে। আর এতে ব্যয় হবে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি)।
সোমবার (১৫ জুলাই) জাতিসংঘের এক আনুমানিক হিসাবের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
গেল জুন মাসে জাতিসংঘের পরিবেশ-বিষয়ক সংস্থা ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। মূলত গাজাকে নতুন করে গড়ে তুলতে কতটা সময় ও শ্রম ব্যয় হবে, তার ওপর আলোকপাত করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের হিসাব অনুসারে, গাজায় মোট ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা অঞ্চলটির মোট ভবনের অর্ধেকের বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এছাড়া এক-দশমাংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এক-তৃতীয়াংশ বেশ খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ফেলার জন্য ২৫০ থেকে ৫০০ হেক্টর জমির প্রয়োজন পড়বে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
এর আগে মে মাসে জাতিসংঘের আরেক সংস্থা ইউএন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম জানিয়েছিল, সবচেয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে গেলেও গাজা পুনর্গঠনে ২০৪০ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে। এতে ব্যয় হবে ৪০ বিলিয়ন ডলার।
সংস্থাটি আরও জানায়, ইসরাইলি আগ্রাসন গাজায় এত বেশি ক্ষতি করেছে যে, অঞ্চলটির স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সম্পদ খাতে ৪০ বছরের অর্জন ধুলোয় মিশে গেছে।
গাজা-ভিত্তিক জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা গত সপ্তাহে গার্ডিয়ানকে বলেছেন, ‘অবকাঠামোর যে পরিমাণ ক্ষতি করা হয়েছে তা পাগলামীর পর্যায়ে পড়ে…দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একটি ভবনও নেই যেখানে ইসরাইল হামলা চালায়নি।
তিনি আরও বলেন,
প্রকৃত অর্থেই এই অঞ্চলের ভৌগোলিক চিত্র পরিবর্তিত হয়ে গেছে। যেখানে আগে পাহাড় ছিল না, এখন সেখানে পাহাড় হয়ে গেছে। দুই হাজার পাউন্ডের বোমাগুলো আক্ষরিক অর্থেই এই অঞ্চলের মানচিত্র বদলে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। নয় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এ হামলায় ৩৮ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।