বিশ্ব এক প্রকার ভুলতেই বসেছে করোনা মহামারির কথা। করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে যে পূর্ব-সতর্কীকরণ নিয়ম-কানুন মানা হতো তাও এখন মানেন না অনেকে। এরই মধ্যে বিশ্বে আবারও ফিরেছে করোনা আতঙ্ক। কানাডা ও রোমানিয়ায় এর মাত্রা সবচেয়ে বেশি বলে জানিয়েছে ওয়ার্ল্ডোমিটার।
পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুসারে, করোনায় আক্রান্ত সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। বিশ্বে শীতপ্রধান দেশ কানাডা এবং রোমানিয়ায় গ্রীষ্মের মৌসুম আসার সঙ্গে সঙ্গেই করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শনিবার (১৩ জুলাই) রোমানিয়ায় করোনা ভাইরাসে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৯০ জনের বেশি বলে জানা গেছে। আর কানাডায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৩৫০ জনে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় এ দেশ দুটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বলে জানা গেছে।
রোমানিয়া ও কানাডায় বছরের বেশিরভাগ সময় জুড়েই শীতের মৌসুম চলে। তবে দেশ দুটিতেই বর্তমানে গ্রীষ্মের মৌসুম চলছে। রোমানিয়ায় স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৮ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেও বর্তমানে দেশটির তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। আবার কানাডায় স্বাভাবিক তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে গ্রীষ্মের মৌসুম চলায় দেশটির তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। আর এ সময়েই বেড়েছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এক প্রতিবেদনে জানায়, প্রতি সপ্তাহে সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১৭০০ জন মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্রহণের হার হ্রাসের বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘স্বাস্থ্যকর্মী এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিনের কভারেজ হ্রাস পেয়েছে। তারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছেন।’
তিনি জানান, ‘করোনা ভাইরাসে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর শেষ ডোজ নেয়ার ১২ মাসের মধ্যে আবার ভ্যাকসিন নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে ডব্লিউএইচও।’
২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২৩১টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯।
বিশ্বব্যাপী এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭০ কোটি ৪৭ লাখ ৫৩ হাজার ৮৯০ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৭ লাখ ১০ হাজার ৬৮১ জন। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন ৬৭ কোটি ৫৬ লাখ ১৯ হাজার ৮১১ জন।