নেপালে পার্লামেন্টের আস্থা ভোটে হেরে গেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল প্রচণ্ড। জোটের অন্যতম অংশীদার কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপালের (ইএমএল) সমর্থন প্রত্যাহারের পর শুক্রবার (১২ জুলাই) অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে হেরে গিয়েছেন তিনি। ফলে ক্ষমতা গ্রহণের দেড় বছরের মাথায় পদত্যাগ করতে হচ্ছে তাকে।
প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমলের সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের পর বুধবার (১০ জুলাই) নয়া জোটের ঘোষণা করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির দল কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল (ইউএমএল)।
আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী তথা নেপালি কংগ্রেসের প্রধান শের বাহাদুর দেউবার সঙ্গে জোট সরকার গড়ার বিষয়ে এরই মধ্যে সমঝোতা চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ওলির দল।
নেপাল পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভসের আসন সংখ্যা ২৭৫। এর মধ্যে দেউবার নেপালির কংগ্রেসের ৮৮ এবং ওলির সিপিএন (ইউএমএল)-এর ৭৯ জন সদস্য রয়েছেন। অর্থাৎ দু’দল হাত মেলালে অনায়াসেই সংখ্যাগরিষ্ঠতার ম্যাজিক ফিগার ১৩৮ ছোঁয়া সম্ভব।
অন্যদিকে প্রচণ্ডের দল সিপিএন (মাওয়িস্ট সেন্টার)-এর ৩২ সদস্য রয়েছেন। মাওবাদীদের দুই সহযোগী দল, রাষ্ট্রীয় স্বতন্ত্রতা পার্টির ২১ এবং সিপিএম (ইউনিফায়েড সোশ্যালিস্ট)-এর ১০ জন হাউস সদস্য।
২০২২ সালের নভেম্বরে নেপালের সাধারণ নির্বাচনে নেপালি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে লড়েছিল প্রচণ্ডের মাওয়িস্ট সেন্টার। কিন্তু জোটে জেতার পরই দেউবাকে ছেড়ে ওলির সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন প্রচণ্ড।
২০২৩-এর মধ্যপর্বে ওলির সঙ্গে মতবিরোধের সময় দেউবার সমর্থন নিয়ে কাঠমান্ডুর কুর্সি বাঁচিয়েছিলেন একসময়ের এই গেরিলা যোদ্ধা। কিন্তু এবার ‘চীনপন্থী’ ওলি ‘জাতীয়তাবাদী’ দেউবার সঙ্গে হাত মেলানোয় আইনসভার পাটিগণিতের হিসাবে প্রচণ্ড এখন ‘ব্যাকফুটে’।
প্রচণ্ডের নেতৃত্বেই নব্বইয়ের দশকে নেপালে রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ শুরু করে মাওবাদীরা। দীর্ঘ গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতির পর দেড় দশক আগে নেপাল থেকে রাজতন্ত্রের অবসান হয়। কিন্তু তারপর থেকেই রাজনৈতিক অস্থিরতার শিকার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটি।
নেপালে ২০০৮ থেকে সেখানে ১৩ বার প্রধানমন্ত্রী বদল হয়েছে। আরও একবার পরিবর্তন দেখতে চলেছে নেপালিরা। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ১৪তম প্রধানমন্ত্রীর নাম স্থির করতে বৈঠক করেন দেউবা ও ওলি। শুক্রবার হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভসে অনুষ্ঠিত আস্থা ভোটের পরীক্ষায় হেরে যান প্রচণ্ড।