যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ডে ৪০ হাজার ভোটকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ভোট দিতে ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছেন লাখ লাখ মানুষ। সাধারণ নাগরিকদের পাশাপাশি ভোট দিচ্ছেন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারাও।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) স্থানীয় সময় সকাল সাতটায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। এরই মধ্যে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ও প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকসহ বেশ কয়েকজন নেতা ভোট দিয়েছেন।
বিবিসির প্রতিবেদন মতে, ইংল্যান্ডের উত্তর-পূর্বে নর্থ ইয়র্কশায়ারে স্ত্রী অক্ষতা মূর্তিকে সঙ্গে নিয়ে ভোট দিয়েছেন সুনাক। ভোট শুরু হওয়ার প্রায় আধা ঘন্টা পরই তারা স্থানীয় ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হন।
একইভাবে স্ত্রী ভিক্টোরিয়াকে সাথে নিয়ে ভোট দিয়েছেন প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ার স্টারমার। তারা উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের উইলিংহাম টেন্যান্টস হলে ভোট দেন।
এছাড়া স্কটিশ ফার্স্ট মিনিস্টার ও এসএনপি নেতা জন সুইনি ভোট দিয়েছেন। ব্লেয়ারগোয়ারির বুরেলটন গ্রামের বারেলটন ভিলেজ হলে ভোট দেন তিনি। বেলফাস্টে ভোট দিয়েছেন ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টি (ডিইউপি) নেতা গ্যাভিন রবিনসন।
উত্তর আয়ারল্যান্ডের পোর্টডাউনে ভোট দিয়েছেন আলস্টার ইউনিয়নিস্ট পার্টির নেতা ডগ বিটি। গ্লাসগোর একটি ভোটকেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন স্কটিশ লেবার নেতা আনাস সারওয়ার। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ফুরহিন ও তাদের ছেলে আলিয়ান।
এবারের নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত ভোটার প্রায় ৪ কোটি ৬০ লাখ। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউজ অব কমন্সের সাড়ে ছয়শ’ সদস্য বাছাই করতে ভোট দিচ্ছেন তারা।
প্রতিটি জায়গার ফলাফল রাতে এবং শুক্রবার (৫ জুলাই) সকালে ঘোষণা করা হবে। সরকার গঠনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ অন্তত ৩২৬টি আসনে জয় পেতে হবে।
যুক্তরাজ্যে নির্বাচিত সরকারের মেয়াদ হয় পাঁচ বছরের। গতবার অর্থাৎ ২০১৯ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল কনজারভেটিভ পার্টি। নিয়ম মাফিক পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু তার আগেই আগাম নির্বাচন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।
যুক্তরাজ্য ৬৫০টি নির্বাচনি কেন্দ্র বা এলাকায় বিভক্ত। এই প্রত্যেক নির্বাচনি এলাকার ভোটাররা একজন সাংসদ নির্বাচন করেন যারা তাদের হয়ে ‘হাউস অফ কমন্স’-এ প্রতিনিধিত্ব করেন।
নির্বাচনি ময়দানে লড়াই করতে নামা প্রার্থীদের মধ্যে অধিকাংশ কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি। তবে কেউ কেউ আবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবেও ভোটে লড়েন।
নির্বাচনে যে দুই দল সবচেয়ে বেশি ভোট পেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে তারা হলো ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি ও লেবার পার্টি। ৪৪ বছরের ঋষি সুনাক কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ২০২২ সালে লিজ ট্রাসের পর প্রধানমন্ত্রী হন তিনি।
আধুনিক সময়ে ব্রিটেনের সবচেয়ে কম বয়সের প্রধানমন্ত্রী সুনাক। শুধু তাই নয়, তিনিই প্রথম কোনো ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তি যিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন।
অন্যদিকে লেবার পার্টির নেতৃত্বে রয়েছেন স্যার কিয়ের স্টারমার। তার বয়স ৬১ বছর। ২০২০ সালে জেরেমি করবিনের পর দলের নেতৃত্ব দেয়ার জন্য নির্বাচিত হন তিনি। এর আগে ‘ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিস’-এর প্রধান ছিলেন স্টারমার। পাবলিক প্রসিকিউশনের পরিচালক হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।