pakistan1

আফগানিস্তানে হামলা চলবে: পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী

সন্ত্রাসবাদ দমনের লক্ষ্যে নেওয়া নতুন সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে আফগানিস্তানে হামলা অব্যাহত রাখবে পাকিস্তান। আজ মঙ্গলবার এ কথা বলেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ।

বিবিসিকে তিনি বলেন, আফগানিস্তান থেকে কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠী পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী ও বেসামরিকদের নিশানা করে হামলা চালাচ্ছে। বিমান হামলা চালানো হয়েছে এসব গোষ্ঠীর অবস্থানে।

আফগানিস্তানে হামলা চালানো হলেও বিষয়টি এত দিন কোনো জ্যেষ্ঠ পাকিস্তানি কর্মকর্তা স্বীকার করেননি। গত মার্চে শুধু পাকিস্তানি কর্মকর্তারা আফগানিস্তানে একটি হামলার কথা স্বীকার করেন।

আফগানিস্তানে এসব হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও সমালোচনা করে আসছে তালেবান সরকার। আফগান কর্মকর্তারা এসব হামলাকে দেশটির সার্বভৌমত্বের চরম লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছিলেন।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিবিসিকে বলেন, ‘এটা ঠিক যে আমরা আফগানিস্তানের অভিযান চালাচ্ছি এবং ভবিষ্যতেও আমরা অভিযান অব্যাহত রাখব। আমরা তাদের সমাদর করতে পারি না। হামলা হলে আমরাও পাল্টা হামলা চালাব।’ অন্য একটি দেশে এভাবে হামলা চালানোর বৈধতা নিয়ে শঙ্কাও উড়িয়ে দিয়ে খাজা আসিফ আরও বলেন, ‘পাকিস্তান সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে তালেবানকে জানায় না।’

সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে তালেবানকে কোনো কিছু না জানানো প্রসঙ্গে খাজা আসিফ বলেন, ‘এতে করে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে শত্রুপক্ষকে খতম করা হয়। কেন আমাদের তাদের বলতে হবে? প্রস্তুত থাকো, আমরা আসছি।’ পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এমন মন্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ অভিহিত করে তালেবান পাল্টা হুমকি দিয়ে বলেছে, আফগানিস্তানে হামলা চালালে তার পরিণতি ভোগ করতে হবে।

২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ন্যাটো জোটের সেনারা আফগানিস্তান ছাড়লে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে তালেবান। এর পর থেকে দুই প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন বেড়েছে। তালেবানের একটি অংশ পাকিস্তানেও তৎপর। সশস্ত্র এ গোষ্ঠীর নাম তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)। পাকিস্তানের অভিযোগ, টিটিপিকে আফগানিস্তানে আশ্রয় ও প্রশ্রয় দিচ্ছে তালেবান।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ অভিযোগ করে বলেন, ‘আফগানিস্তানের ভূখণ্ড ব্যবহার করে টিটিপি যাতে পাকিস্তানে হামলা চালাতে না পারে, এ জন্য একাধিকবার আফগানিস্তানের সরকারের প্রতি আমাদের পক্ষ থেকে অনুরোধও জানানো হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তালেবান সরকার টিটিপির তৎপরতা বন্ধে কোনো পদক্ষেপই নেয়নি। তালেবান টিটিপির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে অনীহা দেখাচ্ছে।’

পাকিস্তান সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে, ‘রিজলভ ফর স্টাবিলিটি’ নামে নতুন এক সামরিক অভিযান শুরু করেছে তারা। দেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা মোকাবিলার লক্ষ্যে এ অভিযান চালানো হবে।

তবে সমালোচক এমনকি পাকিস্তান সরকারের কিছু সূত্র জানিয়েছে, চীনের চাপের মুখে এ অভিযান শুরু করেছে ইসলামাবাদ। কারণ, পাকিস্তানে কর্মরত প্রায় ২৯ হাজার চীনা নাগরিক নিরাপত্তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। এর মধ্যে আড়াই হাজারই কাজ করছেন চীন–পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) নির্মাণের কাজে। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্পের অংশ হচ্ছে সিপিইসি।

Scroll to Top