লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পাল্টাপাল্টি হামলায় বৃহত্তর যুদ্ধের শঙ্কা জোরালো হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্য অনুসারে, গাজায় কোনও যুদ্ধবিরতি চুক্তি না হলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে বড় আকারের সংঘাত শুরু হতে পারে। তবে লেবানন যুদ্ধ এড়াতে ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ চুক্তি চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা লেবানন প্রতিরোধ গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। গত কয়েক ঘণ্টায় লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুল্লাহর বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে দফায় দফায় হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি ইহুদিবাদী সেনাদের।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে, তারা জিবকিন এলাকায় হিজবুল্লাহর একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। এছাড়া খাইয়াম এবং হুলা এলাকার বেশ কিছু স্থাপনা এবং ওডেইসাহ এলাকায় একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলার কথাও স্বীকার করেছে ইসরায়েল।
এর আগে জাতিসংঘে ইরানের মিশন ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে যে, উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যেই যদি ইসরায়েল লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করে তবে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে।
সম্প্রতি হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করেছে ইসরায়েল। এরই মধ্যে লেবাননে হামলা চালানোর অনুমোদন ও বৈধতা দিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। কিন্তু এর বিরুদ্ধে ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে তাদের দুই মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি। সতর্ক করেছে তুরস্কও।
যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও তুরস্ক সবাই ইসরায়েলের পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সম্প্রতি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট ওয়াশিংটন সফরকালে জানিয়েছেন, তার দেশ লেবাননে যুদ্ধ চায় না। তবে কূটনীতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে হিজবুল্লাহর ওপর ‘ধ্বংসযজ্ঞ’ চালানো হবে।
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ চাই না, তবে আমরা সব পরিস্থিতির জন্যই প্রস্তুতি নিচ্ছি। হিজবুল্লাহ ভালো করেই বোঝে যে যদি একটি যুদ্ধ শুরু হয়, তাহলে আমরা লেবাননে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারি।’
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। জবাবে গাজায় অব্যাহত বিধ্বংসী হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এর পর থেকেই মূলত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে শুরু করে। সীমান্তে দুই পক্ষের মধ্যে নিয়মিত ছোট ছোট সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। গ্যালান্টের দাবি, সাম্প্রতিক মাসগুলোয় ইসরায়েল ৪০০ জনের বেশি হিজবুল্লাহ সদস্যকে হত্যা করেছে।