কেরালায় গিয়ে ভোটারদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এবার লোকসভা নির্বাচনে দক্ষিণের ওয়েনাড আসন থেকে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। এই আসনে সিপিআই প্রার্থী অ্যানি রাজাকে ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৪২২ ভোটে হারিয়েছেন রাহুল।
জয় পাওয়ার পর আজ বুধবার প্রথম রাজ্যটিতে গেলেন রাহুল গান্ধী। সেখানে তিনি মালাপপুরামে জনসমাবেশে ভাষণ দেন। সেখানে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘আমার সামনে উভয়সংকট।…আমি কি ওয়েনাড আসনের সংসদ সদস্য, নাকি রায়বেরিলির?’ উত্তর প্রদেশের রায়বেরিলি থেকেও রাহুল জয়ী হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিদ্রূপ করে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমি প্রধানমন্ত্রীর মতো নই, আমি ঈশ্বর দ্বারা পরিচালিত নই। আমি একজন মানুষ। আপনারা দেখবেন, মোদি বলেছিলেন, নির্বাচনে তাঁরা ৪০০ আসন পাবেন, পরে বললেন ৩০০ আসন পাবেন। এরপর যখন সেটির সম্ভাবনাও নেই হয়ে গেল, তখন বলতে শুরু করলেন, তিনি ঈশ্বরপ্রেরিত। তিনি কোনো সিদ্ধান্ত নেন না। তাঁর ঈশ্বর সব সিদ্ধান্ত নেন। মোদিজির অদ্ভুত “পরমাত্মা” তাঁকে আদানি-আম্বানির পক্ষে সব সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে। “পরমাত্মা” তাঁকে মুম্বাই বিমানবন্দর, লক্ষ্ণৌ বিমানবন্দর ও বিদ্যুৎকেন্দ্র আদানিকে দিতে বলে।’
রাহুল গান্ধী বলেন, ‘ভারতের দরিদ্র জনগোষ্ঠী আমার ঈশ্বর। আমার ঈশ্বর ওয়েনাডের জনগণ। এটি আমার জন্য খুবই সহজ। আমি আমার জনগণের সঙ্গে কথা বলি এবং আমার ঈশ্বর আমাকে বলে দেন কী করতে হবে। এখন ওয়েনাড বা রায়েবেরিলি প্রশ্নে ফিরে আসি। আমি আপনাদের যে প্রতিশ্রুতি দেব, তাতে ওয়েনাড ও রায়বেরিলি উভয়ই খুশি হবে।’
প্রধানমন্ত্রী মোদির বিরুদ্ধে রাহুল আরও বলেন, ‘…নির্বাচনের পর আপনারা দেখবেন, প্রধানমন্ত্রী সংবিধানকে কপালে ছোঁয়াচ্ছেন।’
কংগ্রেসের এই নেতা বলেন, ‘কেরালা, উত্তর প্রদেশ ও অন্যান্য রাজ্যের জনগণ প্রধানমন্ত্রীকে দেখিয়ে দিয়েছেন যে তিনি ভারতের জনগণকে হুকুম দিতে পারেন না। ভারতের জনগণ প্রধানমন্ত্রীকে দেখিয়ে দিয়েছেন যে সংবিধান আমাদের কণ্ঠস্বর এবং সংবিধানে হাত দেবেন না।’
রাহুল বলেন, ‘অযোধ্যায় হেরেছে বিজেপি। অযোধ্যার মানুষ একটি বার্তা দিয়েছে, তা হলো ভালোবাসার কাছে ঘৃণা পরাজিত হয়েছে, বিনয়ের কাছে অহংকার পরাজিত হয়েছে।’
লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাহুল বলেন, ‘দিল্লিতে যে সরকার গঠিত হচ্ছে, তা হলো খুঁড়িয়ে চলা সরকার। বিরোধীদের কাছে সজোরে ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। আপনারা দেখবেন, নরেন্দ্র মোদির দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। কারণ, জনগণ তাঁকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। আমাদের দিক থেকে, আমাদের বিরোধী দলের ভূমিকা অব্যাহত থাকবে। আমরা ভারতের জনগণের জন্য একটি বিকল্প ভিশন প্রস্তাব করেছি, তা হলো দরিদ্রবান্ধব নীতি এবং আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করব।’