ব্যবসায়িক নথিপত্রে তথ্য গোপনের অভিযোগে করা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৩০ মে) নিউইয়র্কের একটি আদালত এ রায় দেন। ওই মামলায় আনা ৩৪টি অভিযোগের সব কটিতেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন রিপাবলিকান দলের এই নেতা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আদালতের এই রায়ের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সাবেক প্রেসিডেন্ট ফৌজদারি অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হলেন। আগামী ১১ জুলাই এ মামলায় ট্রাম্পের সাজা ঘোষণা করা হবে। সাবেক এ প্রেসিডেন্টের কারাদণ্ড হতে পারে। তবে আইনজ্ঞরা মনে করছেন, তাকে জরিমানা করার সম্ভাবনাই বেশি।
বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার পর আদালত কক্ষ থেকে বেরিয়ে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, এটা তার জন্য মর্যাদাহানিকর। তিনি ন্যায়বিচার পাননি। আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করবেন।
ট্রাম্পের এই বক্তব্য থেকে অনুমান করা যায়, তিনি এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। তবে এর পাশাপাশি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল বদলে দেয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অপর একটি মামলা চলছে। এ ছাড়া প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেয়াদ শেষের পর হোয়াইট হাউস থেকে সরকারি গোপন নথিপত্র সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে করা আরও একটি মামলা রয়েছে ট্রাম্পের ঘাড়ে।
৭৭ বছর বয়সী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে করা এই মামলায় অভিযোগে বলা হয়, ২০০৬ সালে স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। পরে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এ বিষয়ে মুখ না খুলতে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে স্টর্মিকে এক লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেয়া হয়। তার হাতে এ অর্থ তুলে দিয়েছিলেন ট্রাম্পের আইনজীবী মাইকেল কোহেন। তবে ব্যবসায়িক নথিপত্রে এ লেনদেনের তথ্য গোপন করা হয়। যদিও এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছেন ট্রাম্প।
নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে দীর্ঘ পাঁচ সপ্তাহ ধরে শুনানির পর বৃহস্পতিবার এ রায় ঘোষণা করেন ১২ জন বিচারকের একটি বেঞ্চ। এর আগে তারা রায় নিয়ে ১১ ঘণ্টা আলাপ-আলোচনা করেছেন। এ রায় এমন সময় ঘোষণা করা হলো, যখন কয়েক মাস পরেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এই নির্বাচনে অংশ নিয়ে ফের প্রেসিডেন্ট পদে আসতে চান ট্রাম্প। তবে রায়ের কারণে তার নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় কোনো বাধা আসবে না।