আফ্রিকা থেকে প্রতিবছর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার মূল্যের সোনা পাচার হয়। এর বেশির ভাগই যায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে। পরে তা বৈধভাবে অন্যান্য দেশে রপ্তানি করা হয়। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক একটি এনজিও আজ বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে।
সুইসএইড নামের এনজিওটি আজ এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, আফ্রিকায় উৎপাদিত ৩২১ থেকে ৪৭৪ টন সোনা প্রতিবছর অঘোষিত (অপ্রদর্শিত) থাকছে। যার আর্থিক মূল্য ২৪ থেকে ৩৫ বিলিয়ন ডলারের সমান।
প্রতিবেদনের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ২০২২ সালে আফ্রিকা থেকে মোট ৪৩৫ টন সোনা পাচার করা হয়। এর মূল্য ৩০ বিলিয়নের বেশি।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, আফ্রিকা বিশ্বের প্রধান সোনা উৎপাদনকারী মহাদেশ। মহাদেশটিতে ২০২২ সালে সোনা উৎপাদনে এগিয়ে ছিল ঘানা, দক্ষিণ আফ্রিকা, মালি ও বুরকিনা ফাসো।
সুইসএইডের প্রতিবেদন বলছে, আফ্রিকায় উৎপাদিত সোনার চোরাচালান বেড়েই চলছে। ২০১২ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে আফ্রিকার সোনার পাচার দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে।
সুইজারল্যান্ডের এনজিওটি বলছে, মূল্যবান এই ধাতু লাখ লাখ খনিশ্রমিক, কারিগরের আয়ের উৎস। বিশ্বের অনেক সরকারের রাজস্বের প্রধান উৎস এই ধাতু। বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর অর্থায়নের একটি উপায় এই খাত। তা ছাড়া এই খাতের সঙ্গে জড়িয়ে আছে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও পরিবেশগত অবক্ষয়ের বিষয়টি।
সুইসএইডের প্রতিবেদনে আফ্রিকার সোনা বাণিজ্যের একটি আন্তর্জাতিক কেন্দ্রস্থল হিসেবে দুবাইকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আফ্রিকার সোনা এখান থেকে সুইজারল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়।
এনজিওটি বলছে, আফ্রিকা থেকে উড়োজাহাজে করে দুবাইয়ে সোনা পাচার করা হয়। সে ক্ষেত্রে নিয়মিত ফ্লাইট বা ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ ব্যবহার করা হয়।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে সোনা শোধনাগার শিল্প রয়েছে। সেখানে অনেক সোনা ব্যবসায়ী রয়েছেন। সেখান থেকে আফ্রিকার সোনা মূলত সুইজারল্যান্ডে রপ্তানি হয়। এই সোনা ভারতেও রপ্তানি হয়।
সুইজারল্যান্ডের আইন অনুযায়ী, সোনা প্রক্রিয়াজাত করা শেষ স্থান এই ধাতুর উৎপত্তিস্থল হিসেবে বিবেচিত। ফলে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আফ্রিকার সোনা সুইজারল্যান্ডে গেলেও তা আর আফ্রিকার বলে গণ্য হয় না।