গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাফাহ এলাকার একটি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত এবং আহত হয়েছে। ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, তারা ওই এলাকায় হামাসের অবকাঠামো লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় ৩৫ জন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
দক্ষিণ গাজার কিছু ভিডিও ফুটেছে একটি বড় বিস্ফোরণ এবং তীব্র আগুন দেখা গেছে। হামাস বলেছে, ইসরায়েলি বিমান হামলা রাফাহর উত্তর-পশ্চিমে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের একটি শিবিরে আঘাত করেছে। তারা আরো জানায়, নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে।
আইডিএফ বলেছে, তারা ওই এলাকায় হামাস জঙ্গিদের লক্ষ্য করে এ হামলার চালিয়েছে। এ কারণে বেসামরিক লোকদের ক্ষতি হয়েছে।তারা বিষয়টি জানতে পেরেছে। ঘটনাটি পর্যালোচনা করা হচ্ছে কিন্তু তারা হামাসের লক্ষ্যবস্তুতেই নির্ভুল হামলা চালিয়েছে। এক বিবৃতিতে আইডিএফ বলেছে, তারা উত্তর-পশ্চিম রাফাহতে বিমান হামলায় হামাসের দুই জ্যেষ্ঠ সদস্য ইয়াসিন রাবিয়া এবং খালেদ নগর নিহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির একজন মুখপাত্র অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস নিউজ এজেন্সির উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, উত্তর-পশ্চিমে রাফাহর তাল আল-সুলতান পাড়ায় উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, তাল আল-সুলতানসহ আশেপাশের এলাকা পুড়ে গেছে। অন্য একজন প্রত্যক্ষদর্শী ফাদি দুখান জানিয়েছেন, তিনি একটি বাড়ির দরজায় বসে ছিলেন তখন বিস্ফোরণের শব্দ শোনেন। তিনি রয়টার্সকে আরো বলেন, ‘হঠাৎ আমরা একটি ক্ষেপণাস্ত্রের শব্দ শুনতে পাই। তখন দৌড়ে গিয়ে দেখি রাস্তা ধোঁয়ায় ভরে গেছে। আমরা আর কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না।
’ তখন তিনি একটি বাড়িতে প্রবেশ করেন এবং সেখানে একটি মেয়ে ও একজন যুবককে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন লাশ দেখতে পান।
এর আগে হামাস রাফাহ থেকে তেল আবিবের দিকে আটটি রকেট নিক্ষেপ করেছিল। এরপরেই এমন হামলা চালাল ইসরায়েল। হামাসের সামরিক শাখা বলেছে, ‘তারা বেসামরিক গণহত্যার জবাবে কাজ করেছে।’ ইসরায়েল প্রায় তিন সপ্তাহ আগে রাফাহতে একটি দীর্ঘ আক্রমণ শুরু করে। ইসরায়েল হামাসের ব্যাটালিয়নগুলোকে ধ্বংস করার জন্য এই অভিযান শুরু করে। তারা বলছে, ইসরায়েলি জিম্মিদের রাফাহ শহরে রাখা হয়েছে।
গত শুক্রবার আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের রায়ের পরও রাফাতে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সেই রায়ে বলা হয় রাফাহতে অবশ্যই হামলা বন্ধ করতে হবে। এদিকে জাতিসংঘ বলছে, অভিযান শুরুর পর থেকে ৮ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি রাফাহ থেকে পালিয়েছে। গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, যুদ্ধে প্রায় ৩৬ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।