ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্ট এবং তিন হামাস নেতা হানিয়েহ, সিনওয়ার ও দাইফের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির অনুরোধ করেছেন করিম খান। আইসিসি-র চিফ প্রসিকিউটার করিম খানের ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এবং তিন হামাস নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে আইসিসিকেই নিষিদ্ধ করার আলোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
বাইডেন যা বলেছেন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘আইসিসি-র বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির ক্ষেত্রে রিপাবলিকানদের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে আমি রাজি।’
রিপাবলিকান সেনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম প্রশ্ন করেছিলেন, “আইসিসি-র বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করার জন্য মার্কিন কংগ্রেসের দুই দল যদি একসঙ্গে উদ্যোগ নেয়, তাহলে আপনি কি তা সমর্থন করবেন?” বাইডেন জবাব দেন, “আমি আপনাদের সঙ্গে কাজ করতে রাজি।এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেনও একই কথা জানান।
বাইডেন আরো জানিয়েছেন, ‘করিম খানের সিদ্ধান্ত ভুল। ইসরায়েল ও হামাসের তুলনা চলে না।’ তার মতে, “এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলে, যুদ্ধবিরতি ও পণবন্দিদের মুক্তি দেয়া নিয়ে ইসরায়েল ও হামাস নেতাদের মধ্যে চুক্তিতে পৌঁছানোও কঠিন হয়ে পড়বে।
ইলরায়েলের অবস্থান
ইসরায়েল মঙ্গলবার সব সভ্য দেশকে করিম খানের এই সিদ্ধান্তের নিন্দায় সোচ্চার হওয়ার আবেদন জানিয়েছে। ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র হেইনরিশ বলেছেন, “আমরা সভ্য ও স্বাধীন দেশগুলোর কাছে অনুরোধ করছি, যারা সন্ত্রাসবাদকে ঘৃণা করে, তারা যেন ইসরায়েলের পাশে দাঁড়ায়। আপনাদের উচিত, এই পদক্ষেপের নিন্দা করা।”
ওই মুখপাত্র আরো বলেছেন, “আইসিসি যাতে আপনাদের মনোভাব বুঝতে পারে, সেটা নিশ্চিত করুন।
প্রসিকিউটারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করুন। যদি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়, আপনারা তা রূপায়ণ করবেন না। কারণ, এটা শুধু আমাদের নেতার বিরুদ্ধাচরণ নয়, এটা আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন।”
হাইনরিশ গাজায় ইসরায়েলের অভিযানকে সমর্থন করে বলেছেন, ‘হামাসের সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় এটা জরুরি ছিল।’ হামাসকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইসরায়েল ও অন্য কয়েকটি দেশ।
জার্মানির সমালোচনা
জার্মানির চ্যান্সেলর শলৎসের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ইসরায়েল ও হামাসকে তুলনা করার তীব্র নিন্দা করছে জার্মানি। কোনোভাবে এই তুলনা হতে পারে না। করিম খান তিন হামাস নেতার পাশাপাশি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে বলেছেন।
জার্মান চ্যান্সেলরের মুখপাত্রের বক্তব্য, “হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে আক্রমণ করেছিল। তাই তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করাটা যৌক্তিক। আর জার্মান সরকার বরাবর বলে আসছে, ইসরায়েলের নিজেকে রক্ষা করার অধিকার আছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে করিম খান যে অভিযোগ করেছেন, তা গুরুতর ও তা প্রমাণ করতে হবে।”
জার্মানি এটাও মনে করে, “ইসরায়েল একটা গণতান্ত্রিক দেশ, যেখানে আইনের শাসন আছে এবং স্বাধীন বিচারব্যবস্থা আছে।”
ফ্রান্স
ফ্রান্স জানিয়েছে, তারা আইসিসি-র স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ৭ অক্টোবর হামাস যেভাবে ইসরায়েলে ঢুকে মানুষকে মেরেছে, ফ্রান্স তার তীব্র বিরোধিতা করেছে। আবার তারা ইসরায়েলকেও সাবধান করে দিয়ে বলেছে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলাটা খুবই জরুরি।
ইতালি
ইতালি জানিয়েছে, আইসিসি যেভাবে ইসরায়েল ও হামাসের তুলনা করছে, সেটা অবাস্তব।