ভিয়েতনামের জননিরাপত্তামন্ত্রী তো লামকে দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছে। স্থানীয় সময় আজ বুধবার (২২ মে) লামকে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হয়। দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি গত সপ্তাহে লামকে প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছিল। তারপর গোপন ব্যালটে লামের মনোনয়নকে অনুমোদন করে একটি প্রস্তাব পাস হয়। তখন থেকে রাষ্ট্রপ্রধানের পদে লামই ছিলেন একমাত্র প্রার্থী।
জননিরাপত্তা মন্ত্রী হিসেবে লাম (৬৬) দেশটির দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ‘জ্বলন্ত চুল্লি’ নামে পরিচিতি পাওয়া এই অভিযান ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া দুর্নীতি সমূলে উৎপাটনের লক্ষ্যে পরিচালিত হয়েছিল। তবে সমালোচকরা এই অভিযানকে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আড়ালে ঠেলে দেওয়ার উপায় হিসেবেও দেখেছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
২০১৬ সাল থেকে লাম জননিরাপত্তা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং দেশটিতে মানবাধিকারের বিষয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। মাত্র এক বছর ক্ষমতায় থাকার পর গত মার্চে দুর্নীতির দায়ে পদত্যাগ করেন ভিয়েতনামের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ভো ভ্যান থুং। ভিয়েতনামে চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে ক্ষমতা গ্রহণের দুই বছরের মাথায় পদত্যাগকারীদের মধ্যে ভ্যান থুং দ্বিতীয় ব্যক্তি। এই অভিযানের ফলে অসংখ্য রাজনীতিবিদকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং প্রচুর ব্যবসায়ীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে।
ক্ষমতা গ্রহণের সময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছিলেন ভ্যান থুং। ধারণা করা হয়েছিল, ভ্যান থুং ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবং দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তি নাগুয়েন ফু ট্রংয়ের কাছের মানুষ।
বুধবার একদলীয় রাষ্ট্রটির স্বাভাবিক প্রক্রিয়া অনুযায়ী আইনপ্রণেতারা সর্বসম্মতভাবে লামকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করার প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর পার্লামেন্টে লাম বলেছেন, তিনি ‘দৃঢ় ও অবিচলভাবে’ দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন।
ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্টকে বহুলাংশে আনুষ্ঠানিক ভূমিকা পালন করতে হয়। তারপরও দেশটির শীর্ষ চারটি রাজনৈতিক অবস্থানের (তথাকথিত চার স্তম্ভ) অন্যতম এ পদ। অন্য তিনটি হচ্ছে কমিউনিস্ট পার্টি প্রধান, প্রধানমন্ত্রী ও পার্লামেন্টের স্পিকার। ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির প্রধানের পদটি দেশটির শীর্ষ পদ। বিশ্লেষকদের ধারণা, লাম পরে পার্টি প্রধানের পদের প্রার্থী হতে পারেন।