দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রাষ্ট্র সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ক্রমেই ফুঁসে উঠছে মিয়ানমারের জনগণ। এরই মধ্যে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ। বিভিন্ন শহরে দলে দলে রাস্তায় নেমে এসে কঠোর প্রতিবাদ গড়ে তুলছে সাধারণ মানুষ।
তবে বিক্ষোভ ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। আন্দোলনকারীদে দমন করতে ‘যুদ্ধক্ষেত্রের অস্ত্র’ ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মিয়ানমারে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহিংসতার ভিডিও ও ছবি পর্যালোচনা করে বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। খবর রয়টার্স ও আল জাজিরার।
অ্যামনেস্টি বলছে, মিয়ানমারে বিক্ষোভকারীদের ওপর যে ‘কৌশলগত ও পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ চালানো হচ্ছে, তার ভিজ্যুয়াল প্রমাণ হিসেবে বিভিন্ন ভিডিও ক্লিপ রয়েছে। এছাড়া এই সহিংসতা ঠেকাতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
অ্যামনেস্টির ক্রাইসিস এভিডেন্স ল্যাব মিয়ানমারে চলমান বিক্ষোভের ৫০টিরও বেশি ভিডিও যাচাই করে বলছে, দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিক্ষোভ ঠেকাতে ‘পরিকল্পনামাফিক ও পদ্ধতিগত কৌশল’ ব্যবহার করছে। অ্যামনেস্টির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ভিডিও ফুটেজে স্পষ্ট যে মিলিটারিরা যুদ্ধক্ষেত্রের জন্য উপযুক্ত অস্ত্র দিয়ে সজ্জিত রয়েছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের পর দেশটির ক্ষমতা হাতে নিয়ে নেয় সেনাবাহিনী। এর পর থেকেই জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয় দেশটিতে। রক্তক্ষয়ী এই বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক এবং আহত হয়েছেন অনেকে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, মিয়ানমারে বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫৬ জনের বেশি। তবে, অন্যান্য প্রতিবেদনে এ সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। চলমান বিক্ষোভের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিন ছিল গত ৩ মার্চ। মিয়ানমারের বিভিন্ন নগর ও শহরে সেদিন ৩৮ জন বিক্ষোভকারী নিহত হন।