ভারতে কুখ্যাত মাফিয়া থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা মুখতার আনসারি উত্তরপ্রদেশের বান্দা কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত পৌনে ৯টায় কারাগারে অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে উত্তরপ্রদেশের রানী দুর্গাবতী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মুখতারকে কারাগারে খাবারের সঙ্গে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। খবর এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তরপ্রদেশ রাজনীতির চির বিতর্কিত মুখ গ্যাংস্টার মুখতার আনসারি। রাজ্যের মৌ বিধানসভায় পাঁচবারের প্রাক্তন এই বিধায়কের বিরুদ্ধে ১৫টি খুনের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তাঁর নামে ৬১টি ফৌজদারি মামলা ছিল।
২০০৫ সালের নভেম্বর মাসে গাজিপুরের বিধায়ক কৃষ্ণানন্দ রাই-সহ ৭ জনকে খুনের অভিযোগ ওঠে মুখতারের বিরুদ্ধে। সেই মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ড হয় তাঁর। এর পর সম্প্রতি অস্ত্রের ভুয়ো লাইসেন্স মামলায় এই মাফিয়া রাজনীতিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করেছিলেন আদালত।
তার মৃত্যুর পর হাসপাতালের বাইরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পুরো উত্তর প্রদেশে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কর্মকর্তারা জানান, পূর্ব উত্তর প্রদেশের বান্দা, মাউ, গাজিপুর এবং বারাণসী জেলাতেও বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, যেখানে মুখতার তার অপরাধমূলক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করতেন।
মুখতার আনসারির ভাই আফজাল আনসারি পিটিআইকে বলেন, গত ১৯ মার্চ কারাগারে খাবারের সঙ্গে আমার ভাইকে বিষ দেওয়া হয়েছিল। এ কারণে তাঁর শারীরিক অবস্থা খারাপ ছিল। এর ৪০ দিন আগেও তাঁকে বিষ দেওয়া হয়েছিল। আমার ভাই এসব জানিয়েছিলেন।
মুখতারের ছেলে উমর এ বিষয়ে আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ১৯ মার্চ বাবাকে রাতের খাবারের সঙ্গে বিষ দেওয়া হয়েছিল। আমরা বিচার বিভাগের কাছে যাব, ন্যায়বিচার পাব বলে আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে।
কারা বিভাগ জানিয়েছে, মুখতার রোজা রেখেছিলেন। এ কারণে তার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছিল এবং তিনি ওয়াশরুমে পড়েছিলেন। আজ শুক্রবার বান্দা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হবে।
মুখতার ১৯৮০-এর দশকে একটি গ্যাংয়ে যোগ দেন। পরে ১৯৯০-এর দশকে নিজেই দল গঠন করেন। এই চক্রটি মৌ, গাজিপুর, বারাণসী ও জৌনপুর জেলায় চাঁদাবাজি ও অপহরণে জড়িত ছিল। ২০০৫ সাল থেকে তিনি পাঞ্জাব ও উত্তর প্রদেশের কারাগারে ছিলেন।