সড়কে জুম’আর নামাজ আদায় করতে গিয়ে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয়েছেন ভারতের রাজধানী দিল্লির মুসল্লিরা। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক বরখাস্ত করা হয়েছে।
গত শুক্রবার দুপুরে দিল্লির ইন্দারলোক এলাকার একটি সড়কে নামাজ পড়ার সময় এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
ইন্দ্রলোক এলাকার একটি মসজিদে নামাজ আদায়ের জন্য বিশাল সংখ্যায় মুসল্লিরা জমায়েত করেন। কিন্তু অতিরিক্ত জমায়েতের কারণে অনেকেই ব্যস্ত রাস্তার ওপরেই নামাজ আদায় শুরু করেন থাকেন। ফলে কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হয়, পথ চলতি সাধারণ মানুষও অসুবিধায় পড়েন। খবর হিন্দুস্তান টাইমস’র।
পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর মনোজ কুমার টোমার তখন ইন্দ্রলোক পুলিশ চৌকিতে কর্মরত ছিলেন। তিনি রাস্তায় নামাজে দাঁড়ানো মুসল্লিদের তুলে দেয়ার চেষ্টা করেন। তার বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন বিক্ষুব্ধ মুসল্লিরা।
এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ৩৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা গেছে দিল্লি পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা ওই ঘটনাস্থলে পৌঁছন এবং নামাজ আদায়কারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাদের মধ্যে এক পুলিশ কর্মকর্তা নামাজ আদায়কারীদের রাস্তা থেকে উঠে যেতে বলেন, এ সময়ই নামাজরত অবস্থাতাতেই পিছন থেকে দুই ব্যক্তিকে লাথি মারেন ওই পুলিশ সদস্য। হাত দিয়ে অন্য একজনের ঘাড়েও মারেন তিনি।
পুলিশ কর্মকর্তার ওই আচরণের বিরোধিতা করে ঘিরে তাকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান নামাজ আদায়কারীরা। শুক্রবারের এ ঘটনা সামনে আসার পরই সাসপেন্ড করা হয়েছে অভিযুক্ত ওই সাব-ইন্সপেক্টরকে।
দিল্লি উত্তর জোনের পুলিশের ডেপুটি কমিশনার এমকে মিনা বলেন, এ ঘটনায় ওই পুলিশের সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইন্দ্রলোক এলাকায় রাস্তার ওপর নামাজ আদায়ের কোন অনুমতি ছিল কিনা, সেই ব্যাপারটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হবে। এদিকে এ ঘটনার পর মুসল্লিরা ওই পুলিশের বিচার চেয়ে রাস্তা অবরোধ করেন। তারা জানায়, মসজিদের ভেতরে কোনো জায়গা ছিল না। এজন্য রাস্তায় তাদের নামাজ আদায় করতে হয়েছে।
এ ঘটনাকে লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছে জাতীয় কংগ্রেস। এই ঘটনার একটি ভিডিও পোস্ট করে কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ইমরান প্রতাপগড়ী লিখেছেন, এই দিল্লি পুলিশের সৈনিক নামাজ পড়ার সময় একজন ব্যক্তিকে লাথি মারছে, তিনি সম্ভবত মানবতার মূল নীতিগুলি বোঝেন না। ওই সৈনিকের হৃদয়ে কিভাবে এই ঘৃণা ভরে আছে? দিল্লি পুলিশকে অনুরোধ করা হচ্ছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যথাযথ ধারায় মামলা দায়ের করতে এবং চাকরি থেকে তাকে বরখাস্ত করতে।