ইয়েমেনে সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথিদের ৩টি লক্ষ্যবস্তুতে নতুন করে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য। হুথি গোষ্ঠী নিজেই এই হামলার খবর প্রকাশ করেছে।
তবে হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠী সোমবার উত্তরাঞ্চলীয় সাদা প্রদেশে নতুন করে মার্কিন-ব্রিটিশ বিমান হামলার খবর দিয়েছে। হুথিদের পরিচালিত আল-মাসিরাহ টেলিভিশন বলেছে, সাদার বাকিম জেলার ইয়াসনাম এলাকায় তিনটি হামলা চালানো হয়েছে।
তবে এই হামলার জেরে হতাহতের বা ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর এখনও পাওয়া যায়নি।
আনাদোলু বলছে, ইউকে মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস এজেন্সি ইয়েমেনের বন্দর শহর এডেনের প্রায় ৯১ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ-পূর্বে একটি জাহাজে হামলার কথা জানানোর পরপরই এই বিমান হামলা চালানো হয়। যদিও হামলার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে তাৎক্ষণিক কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য এর আগে বেশ কয়েক দফায় যৌথভাবে হুথিদের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে যৌথ হামলা চালায়। এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে মার্কিন ও ব্রিটিশ যুদ্ধবিমান ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠীর ১৮টি স্থাপনায় হামলা চালায়। ইরান-সমর্থিত হুথিদের বিরুদ্ধে পরাশক্তি এই দুই মিত্র দেশের চালানো সেই হামলা ছিল চতুর্থদফা যৌথ অভিযান।
সেই হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, সর্বশেষ হামলায় হুথিদের স্টোরেজ সুবিধা, ড্রোন, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, রাডার এবং সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর একটি হেলিকপ্টারকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়। অন্যদিকে যুক্তরাজ্য জানায়, হুথিদের সক্ষমতাকে ‘আরও অবনমিত’ করতে কাজ করেছে মিত্ররা।
ইরান-সমর্থিত হুথিরা লোহিত সাগরের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য রুট দিয়ে যাতায়াতকারী ইসরায়েল ও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে যুক্ত জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে চলেছে এবং তাদের এই হামলা অব্যাহত রয়েছে। আর হুথিদের জাহাজে বারবার হামলার প্রতিক্রিয়ায় এই হামলা চালানো হয়েছে।
লোহিত সাগরে হুথিদের এই হামলা বিশ্ব বাণিজ্যকে ব্যাহত করেছে এবং অনেকের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে বলে দাবি পশ্চিমাদের। মূলত হুথিরা রাজধানী সানাসহ ইয়েমেনের বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণ করে। গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন অব্যাহত থাকার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল এবং পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে যুক্ত জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করছে তারা।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক থাকার সন্দেহে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হুথিদের হামলা লোহিত সাগরে উত্তেজনা ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে। মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী হুথিদের বিরুদ্ধে হামলার জবাব দিয়েছে। এর বিপরীতে হুথিরা আমেরিকান এবং ব্রিটিশ স্বার্থকেও হামলার বৈধ লক্ষ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে।
এছাড়া হুথিদের বিরুদ্ধে হামলার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র একটি বহুজাতিক নৌ টাস্কফোর্সও গঠন করেছে যার লক্ষ্য লোহিত সাগরের ট্রানজিট রুটে জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তা রক্ষা করা। হুথিদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা জোটের হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় ব্যাপক উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে।