গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর তাণ্ডবে প্রতিদিনই শত শত নিরীহ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারাচ্ছে। এর মধ্যে অধিকাংশই নারী এবং শিশু। সেখানে গত ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা এবং বুধবার সকালের মধ্যেই ৭৬ জন প্রাণ হারিয়েছে। ফলে সেখানে নিহতের সংখ্যা ২৯ হাজার ৯৫৪ জনে দাঁড়িয়েছে। খবর এএফপি, আল জাজিরা।
গত ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় মোট ৭০,৩২৫ জন আহত হয়েছেন। নিখোঁজ ও ধ্বংসস্তূপের নিচে রয়েছে আরও অনেকে।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার কামাল আদওয়ান ও আল শিফা হাসপাতালে পানিশূন্যতা ও অপুষ্টিতে ছয় শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আরও অনেক শিশুর অবস্থা গুরুতর। যেকোনো সময় তাদের মৃত্যু হতে পারে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) কামাল আদওয়ান হাসপাতালে চার শিশুর মৃত্যু হয়। এরপর আল শিফা হাসপাতালে আরও দুই শিশুর মৃত্যু হয়।
প্রায় পাঁচমাস ধরে গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। দীর্ঘ সময় ধরে চলা এ হামলার কারণে অবরুদ্ধ এ ভূখণ্ডটিতে তীব্র মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে কয়েক লাখ বাসিন্দা।
লাখো মানুষ উদ্বাস্তু, খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছে। ইসরায়েলের বাধায় গাজায় ত্রাণ সহায়তা সরবরাহের গতি আরও মন্থর হয়ে গেছে। ত্রাণ না পৌঁছানোয় ছোট ছোট শিশুরাও খাবার পাচ্ছে না।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয়কারী সংস্থা জানিয়েছে, উত্তর গাজামুখী অর্ধেকের বেশি ত্রাণ সহায়তাকে গত মাসে সেখানে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি ইসরায়েল। কোথায় ও কীভাবে এই ত্রাণ সহায়তা দেয়া হবে– সে বিষয়েও জাতিসংঘের ওপর খবরদারি করছে ইসরায়েলি সেনারা।
বর্তমানে উপত্যকাটির এক-চতুর্থাংশ বাসিন্দা দুর্ভিক্ষ থেকে মাত্র একধাপ দূরে রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির অফিস ফর দ্য কোঅর্ডিনেশন অব হিউম্যানিট্যারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ইউএনওসিএইচএ)-এর কোঅর্ডিনেশন ডিরেক্টর রমেশ রাজাসিংহাম বলেছেন, গাজার দক্ষিণে জনাকীর্ণ এলাকায়ও সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। আর যদি এমনটা হয়, তাহলে মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের কাজ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
তিনি নিরাপত্তা কাউন্সিলকে বলেন, গাজার দুই বছরের কমবয়সী প্রতি ছয় শিশুর একজন অপুষ্টিতে ভুগছে এবং মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সার্বিকভাবে, গাজার ২৩ লাখ ফিলিস্তিনিদের সবাই প্রয়োজনের তুলনায় \’খুবই সামান্য\’ খাবার খেয়ে বেঁচে আছেন।