গাজা উপত্যকার সর্বদক্ষিণের শহর রাফাহতে পরিকল্পিত স্থল আগাসনের ব্যাপারে তেল আবিবকে সতর্ক করে দিয়েছেন সাবেক ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী ইহুদ ওলমার্ট। তিনি বলেছেন, রাফাহতে আগ্রাসন চালালে ইসরাইলকে চরম আন্তর্জাতিক ক্ষোভের মুখে পড়তে হবে যা সামাল দেয়া তেল আবিবের পক্ষে সম্ভব হবে না।
২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকা ওলমার্ট ব্লুমবার্গকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আন্তর্জাতিক সমাজের ধৈর্য এমন একটি স্থানে পৌঁছেছে যে, এরপর আর তাদের পক্ষে রাফাহ আগ্রাসন সহ্য করা সম্ভব হবে না।”
রাফাহ অভিযানের ফলে মিসরের সঙ্গে ইসরাইলের স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তিও বিপদের মুখে পড়বে বলে তিনি সতর্ক করে দেন। ইহুদ ওলমার্ট বলেন, গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার করে সেখানে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী মোতায়েন করার ওপর প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর জোর দেয়া উচিত।
গাজার মিসর সীমান্তে অবস্থিত রাফাহ শহরকে যুদ্ধের শুরুতে ‘নিরাপদ অঞ্চল’ বলে ঘোষণা করেছিল ইহুদিবাদী ইসরাইল। তেল আবিবের ধারনা ছিল, হামাসের সমস্ত ঘাঁটি, সদরদপ্তর ও ইসরাইলি পণবন্দিরা উত্তর গাজায় রয়েছে। কিন্তু গত প্রায় পাঁচ মাসে তারা উত্তর ও মধ্য গাজার সর্বত্র তন্ন তন্ন করেও হামাসের সদরদপ্তর কিংবা পণবন্দিদের খুঁজে পায়নি।
এ কারণে দখলদার ইসরাইল এখন ‘নিরাপদ অঞ্চল’ ঘোষিত রাফাহ শহরে অভিযান চালাতে চায়। অথচ ইসরাইলের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সহায় সম্বল হারিয়ে ১৫ লাখ গাজাবাসী রাফাহ শহরে আশ্রয় নিয়েছেন। ওই শহরে সম্ভাব্য স্থল আগ্রাসনের ব্যাপারে ইসরাইলকে সতর্ক করেছে খোদ তেল আবিবের অপকর্মের প্রধান সহযোগী মার্কিন সরকার। কিন্তু তা সত্ত্বেও নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি ‘যেকোনো মূল্যে’ রাফাহ শহরে অভিযান চালাবেন।
ওদিকে মিসর সরকার এরইমধ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, রাফাহতে অভিযান চালালে শান্তি চুক্তি স্থগিত করা হবে। কায়রো আরো বলেছে, গাজার ২৩ লাখ অধিবাসী রাফাহ দিয়ে প্রবেশ করা ত্রাণের সাহায্যে কোনোমতো বেঁচে আছে। রাফাহতে আগ্রাসন চালালে ত্রাণ তৎপরতা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসও বলেছেন, রাফাহতে অভিযান চালালে উপত্যকার ত্রাণ তৎপরতার কফিনে শেষ পেরেকটি ঠোকা হবে।