রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা ও গত এক দশক ধরে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টোর সমালোচক অ্যালেক্সি নাভালনি কারাগারে মারা গেছেন। আজ শুক্রবার কারাবন্দী অবস্থায় তিনি মারা গেছেন বলে রুশ কারা দপ্তর নিশ্চিত করেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিরি খবরে বলা হয়, নাভালনিকে ১৯ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। দণ্ডের পর তাকে আর্টিক পেনাল কলোনিতে নেওয়া হয়, যেটিকে সবচেয়ে কঠিন কারাগার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
রাশিয়ার ইয়ামলো-নেনেটস জেলার কারা দপ্ত জানায়, হাঁটাহাঁটির সময় নাভালনি খারাপ বোধ করেন। তিনি দ্রুতই জ্ঞান হারান। এ সময় মেডিকেল টিমকে ডাকা হয় এবং তার জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করা হয়। তবে তাতে সফল হওয়া যায়নি।
তারা আরও জানায়, জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা কারাবন্দী নাভালনিকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মৃত্যুর কারণ খুঁজে দেখা হচ্ছে।
রাশিয়ায় নাভালনিকেই একমাত্র বিরোধী নেতা বলে মনে করা হতো। তিনি সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিতে রাশিয়াজুড়ে বিপুল সংখ্যক মানুষকে জড়ো করতে সক্ষম ছিলেন।
২০১১-১২ সালে রাশিয়ার নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। ওই বিক্ষোভ আয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন নাভালনি। রাশিয়ার সরকারের দুর্নীতির বিভিন্ন তথ্য সামনে এনেছিলেন তিনি। এ ছাড়া পুতিন ঘনিষ্ঠদের বিভিন্ন গোপন তথ্যসংবলিত ভিডিও প্রকাশ করতেন তিনি। যা লাখ লাখ মানুষ দেখতেন।
২০১৩ সালে নাভালনি রাশিয়ার রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে ওঠেন। ওই বছর মস্কোর মেয়র নির্বাচনে তিনি ২৭ শতাংশ ভোট পান। রাশিয়ার বেশিরভাগ মানুষের বিশ্বাস ছিল মস্কোর মেয়র নির্বাচন স্বচ্ছ ছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি এত ভোট পেয়েছিলেন।
নাভালনিকে ২০২০ সালে সাইবেরিয়ায় বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল। তবে সেবার তিনি বেঁচে যান। ওই সময় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হয়। পশ্চিমা দেশগুলোর ল্যাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায় নাভালনির দেহে নার্ভ এজেন্ট নামের একটি পদার্থ প্রয়োগ করা হয়েছে।
সুস্থ হয়ে ২০২১ সালে আবারও রাশিয়ায় ফিরে আসেন নাভালনি। তবে দেশে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।