হামাসের নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলনগুলো গাজা উপত্যকায় দ্বিতীয় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইসরাইলের একটি প্রস্তাবের জবাব দিয়েছে।
গতমাসে আমেরিকা, ইসরাইল, কাতার ও মিসরের প্রতিনিধিরা ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে এক বৈঠকে গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করেছিলেন। কাতার ও মিসর মূলত গোটা প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছে।
তিন ধাপে বাস্তবায়নযোগ্য প্যারিস প্রস্তাবের প্রথম ধাপে গাজায় ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি দিয়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে হামাসের হাতে আটক অবশিষ্ট ‘বেসামরিক’ ইসরাইলি বন্দিদের মুক্তি দেয়ার কথা বলা হয়েছিল। ওই ধাপের সফলতার ওপর নির্ভর করে বাকি দুই ধাপ বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছিল যেখানে ছিল গাজায় আটক সব ইসরাইলি বন্দির মুক্তির প্রস্তাবও। কিন্তু প্যারিস প্রস্তাবে গাজায় সরাসরি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির কথা ছিল না।
মিশরীয় ও কাতারি মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে গত সপ্তাহে প্রস্তাবটি হাতে পাওয়ার পর হামাস গাজার বাকি প্রতিরোধ আন্দোলনগুলোর সঙ্গে ব্যাপকভিত্তিক আলোচনা শেষে গতকাল (মঙ্গলবার) তাদের জবাব দিয়েছে। হামাসের জবাবে বলা হয়েছে, সবার আগে গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করে সকল ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। এরপর উপত্যকায় ব্যাপকভিত্তিক ত্রাণ প্রবেশের সুযোগ দিতে হবে, গাজার পুনর্গঠন করতে হবে এবং ১৭ বছরের অবরোধ তুলে নিতে হবে। হামাসের জবাবের শেষ অংশে বলা হয়েছে, ‘এবং বন্দি বিনিময় সম্পন্ন করতে হবে।’
হামাসের জবাবে প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলা হয়েছে, গাজার প্রতিরোধ সংগঠনগুলো ইসরাইলি দখলদারিত্বের অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে তাদের প্রতিরোধ চালিয়ে যাবে। এ সম্পর্কে হামাসের সিনিয়র নেতা মাহমুদ মারদাওয়ি বলেছেন, “স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ছাড়া আমরা কোনো চুক্তিতে যাব না। ফিলিস্তিনি জনগণ এমন কোনো যুদ্ধবিরতি চায় না যার মাধ্যমে তারা প্রথমে তাদের ঘরবাড়িতে ফিরে যাবে এবং এরপর আবার তাদের মাথার উপর এসে বোমা পড়তে থাকবে।”
এদিকে ইসলামি জিহাদ আন্দোলনের উপ মহাসচিব মোহাম্মাদ আল-হিন্দি বলেছেন, তার সংগঠনসহ গাজার সকল প্রতিরোধ সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয় করে হামাস এই জবাব দিয়েছে। তিনি বলেন, গাজায় আগ্রাসন সম্পূর্ণ বন্ধ করে দখলদার সেনাদের ফিরিয়ে নিতে হবে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকার পুনর্গঠন শুরু করতে হবে। ইসলামি জিহাদের পলিটব্যুরো সদস্য ইহসান আতাইয়া আলাদা এক বক্তব্যে বলেছেন, সম্ভাব্য যেকোনো চুক্তিতে ত্রাণসামগ্রী প্রবেশের জন্য গাজার সবগুলো ক্রসিং খুলে দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, ইহুদিবাদী ইসরাইল ও তার প্রধান পৃষ্ঠপোষক আমেরিকার একথা উপলব্ধি করার সময় এসেছে যে, গাজার ভবিষ্যত নির্ধারণে তাদের কোনো ভূমিকা নেই এবং কোনো কিছুই গাজার রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন করতে পারবে না।