লোহিত সাগরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় একটি তেলের ট্যাংকারে আগুন লেগেছে। জাহাজের মালিক ট্রাফিগুরা বলেছে, মার্লিন লুয়ান্ডা শুক্রবার লোহিত সাগরে যাওয়ার সময় তাতে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করেছিল। ইয়েমেনের হুথি যোদ্ধাদের এই হামলা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
লন্ডনভিত্তিক ট্রেডিং ফার্ম ট্রাফিগুরা বলছে, স্টারবোর্ডের পাশে একটি কার্গো ট্যাংকে সৃষ্ট আগুন দমন ও নিয়ন্ত্রণের জন্য বোর্ডে অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম মোতায়েন করা হচ্ছে।
তারা ২৫০ মিটার দীর্ঘ জাহাজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, ক্রুরা সতর্কতা হিসেবে লাইফবোটে চড়েছিল। তবে কোনো আঘাতের খবর পাওয়া যায়নি। জাহাজটিতে ন্যাফথা নামক একটি দাহ্য তরল বোঝাই ছিল, যা আগুনকে আরও বিপজ্জনক করে তোলে।নিরাপত্তা বিষয়ক সংগঠন ইউনাইটেড কিংডম মেরিটাইম ট্রেড অপারেশন বা ইউকেএমটিও বলেছে, তারা একটি জাহাজ থেকে খবর পেয়েছে, বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং ওই জাহাজের অবস্থান থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে একটা ক্ষেপণাস্ত্র দেখা গেছে। জাহাজটি ইয়েমেনের এডেন শহর থেকে ১১১ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল।অল্প সময় পর, দ্বিতীয় আর একটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং ক্ষেপণাস্ত্র দেখা গেছে বলে জানিয়েছে জাহাজটি। আর, দ্বিতীয় বিস্ফোরণ ঘটে জাহাজের এক কিলোমিটারের কম দূরত্বে। দুটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বা কেউ আহত হয়নি। জাহাজটি তার পরের নির্দিষ্ট বন্দরের দিকে অগ্রসর হওয়া অব্যাহত রেখেছে।ইউকেএমটিও বলেছে, জোট বাহিনী এর জবাব দিয়েছে, তবে এ বিষয়ে তারা বিস্তারিত কিছু জানায়নি।ইউএসএস কার্নিতে এই ঘটনা ঘটে ইয়েমেনের এডেন উপকূল থেকে ৬০ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ-পূর্বে। ইউকে মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস (ইউকেএমটিও) এলাকাটি তত্ত্বাবধান করছে।মার্কিন সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ইউএসএস কার্নিকে শুক্রবার এডেন উপসাগরে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, হুথিরা তাদের হামলা শুরু করার পর এটিই প্রথম কোনো আমেরিকান যুদ্ধজাহাজকে সরাসরি লক্ষ্যবস্তু করেছে।ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের একাধিক স্থাপনা লক্ষ্য করে কয়েক দফা হামলা চালিয়েছে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের হামলাগুলো পরিচালনা করা হয়েছিল রাডার স্থাপনা, ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূগর্ভস্থ অস্ত্রাগার লক্ষ্য করে।লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে চলাচলকারী বাণিজ্যিক ও সামরিক জাহাজে হুথি গোষ্ঠীর হামলার জবাবে এই হামলা পরিচালনা করা হয়েছিলো। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর এক বিবৃতিতে বলেছে, বাণিজ্য জাহাজে হুথি গোষ্ঠীর হামলা আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত করছে এবং নৌ চলাচলের অধিকার ও স্বাধীনতাকে লঙ্ঘন করেছে।হুথি বলেছে, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধরত ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে এই হামলা চালাচ্ছে তারা।