সীমান্ত পেরিয়ে পাল্টাপাল্টি হামলায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ইরান-পাকিস্তান সম্পর্ক। গত মঙ্গলবার ইরানের হামলায় পাকিস্তানে অন্তত চারজন প্রাণ হারান। তার জবাবে বৃহস্পতিবার ইরানে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। এতে মারা গেছেন অন্তত নয়জন। এ নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে গুরুতর কূটনৈতিক টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় ইরান-পাকিস্তান বিরোধ মেটাতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে চীন।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং আজ বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, চীন আন্তরিকভাবে আশা করে, উভয় পক্ষ (ইরান ও পাকিস্তান) শান্ত ও সংযমী থাকার চেষ্টা করবে এবং উত্তেজনা বৃদ্ধি এড়াতে পারবে। উভয় পক্ষ চাইলে পরিস্থিতির উত্তেজনা কমাতে আমরা গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে পারি।
ইরান ও পাকিস্তান উভয়ে চীনের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সদস্য। দুই প্রতিবেশীই চীনের কাছে বন্ধুত্বপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবশালী দেশ বলে উল্লেখ করেছেন মাও নিং।
পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তান এবং প্রতিবেশী ইরান দীর্ঘদিন ধরেই একে অপরের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ করে আসছে।
গত মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) ইরান-সীমান্তবর্তী পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশের পঞ্জগুরে ক্ষেপণাস্ত্র জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ আল আদলের ‘সদরদপ্তরে’ হামলা চালায় তেহরান। এতে দুই শিশুসহ অন্তত চারজন নিহত হন।
এ ঘটনার পরপরই ইরানের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে পাকিস্তান। সেই সঙ্গে, তেহরানে নিযুক্ত নিজেদের রাষ্ট্রদূতকেও দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দেয় ইসলামাবাদ।
এর দুদিন যেতে না যেতেই বৃহস্পতিবার সকালে ইরানে পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তান। এতে চার শিশু ও তিন নারীসহ অন্তত নয়জন নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনার পর ইরানে নিযুক্ত পাকিস্তানের শীর্ষ কূটনীতিককে তলব করেছে তেহরান। এ অবস্থায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যদিও পাকিস্তান সরকার বলেছে, তারা ইরানের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্পূর্ণরূপে সম্মান করে। কেবল নিজেদের নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থেই এই হামলা চালিয়েছে ইসলামাবাদ।