দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারের একটি গ্রামে বিমান হামলা চালিয়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা। এতে শিশুসহ ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
এ ছাড়া হামলায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে। গতকাল রোববার (৭ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি গ্রামে বিমান হামলায় শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন বলে রোববার স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে। দেশটির উত্তর এবং পূর্বাঞ্চলে দেশটির জান্তা সরকার বিরোধীদের সাথে লড়াই করছে এবং সময় গড়ানোর সাথে সাথে দেশটি ক্রমবর্ধমান ভয়ানক লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ছে।
এএফপি বলছে, রোববার সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তামু জেলার খাম্পাত টাউনশিপের একটি গ্রামে বিমান হামলার ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় মিডিয়া আউটলেটগুলো শিশুসহ ১৫ জনের মৃত্যুর সংখ্যা প্রকাশ করে এবং ২০ জনের আহত হওয়ার কথা জানায়।
তবে নিরাপত্তার জন্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন প্রত্যক্ষদর্শী – যাদের একজন পুরুষ এবং অন্যজন নারী – এএফপিকে বলেছেন, হামলায় নিহতের সংখ্যা আরও বেশি। তারা বলেন, হামলায় আট শিশুসহ ১৯ জন নিহত হয়েছেন।
পুরুষ প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, গ্রামের দুটি গির্জাকে লক্ষ্য করে প্রথম বোমা হামলা চালানো হয়। আর দ্বিতীয় হামলা হয় যখন লোকজন ভবন থেকে পালিয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘তাদের বেশিরভাগই গির্জার এলাকার বাইরে নিহত হয়েছে কারণ তারা পালানোর জন্য দৌড়াচ্ছিল।’
তিনি আরও বলেন, হামলায় নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে, ভিড়ের কারণে তাদের পরিস্থিতি আরও মারাত্মক হয়ে উঠেছিল।
তিনি বলেন, বিমান থেকে মোট ছয়টি বোমা ফেলা হয়েছে। তারা দুটি গির্জা লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করে। কিন্তু বোমাগুলো গির্জার বাইরে আঘাত হানে এবং কয়েকটি বাড়িতেও আঘাত হানে। আরেকটি বোমা স্থানীয় কমিউনিটির স্কুলের কাছে পড়েছে।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া রোববার রাতে বলেছে, গ্রামে হামলার এসব খবর ‘ভুয়া’। এমআরটিভি আরও বলেছে, সেই সময়ে ওই অঞ্চলে কোনও বিমান ছিল না। গ্রামটি পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তারা জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
সামরিক বাহিনী এই ধরনের বিদ্রোহী দলগুলোকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দুজন প্রত্যক্ষদর্শীই এএফপিকে বলেছেন, রোববারের হামলায় আরও ৩০ জন আহত হয়েছেন। নারী প্রত্যক্ষদর্শী সতর্ক করে বলেন, হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, কারণ কিছু লোক হামলায় গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন।
আহতদের একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। যদিও তিনি এ বিষয়ে আরও বিশদ বিবরণ দেননি।