দুই জরায়ুতে ধারণ করা দুই সন্তানের জন্ম দিলেন সেই নারী

বিশ্বের ০.৩ শতাংশ নারীর মধ্যে দুটি জরায়ু রয়েছে। আর একই সাথে দুটি জরায়ুতেই সন্তান ধারণ করার ঘটনা দশ লাখের মধ্যে মাত্র একটি।

পর পর দুই দিনে দুটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা অঙ্গরাজ্যের এক নারী। তবে আশ্চর্যের বিষয়টি হলো, একটি জরায়ু থেকে নয়, বরং আলাদা আলাদা জরায়ু থেকে জন্ম নিয়েছে শিশু দুটি। খবর বিবিসির।

প্রতি ১০ লাখ নারীর মধ্যে কখনও কখনই দুই জরায়ু থাকার সম্ভাবনা থাকলে, এটি বিরল হিসাবে বিবেচিত হয়। তবে, দুই জরায়ু থাকলে গর্ভধারন হতে পারে ১০ লাখে একজন। সেই আমেরিকান নারী তাদেরই একজন। তিনি কিশোর বয়সেই জেনেছিলেন, তার দুটো জরায়ু থাকার কথা।

৩২ বছরের কেলসি হ্যাচার মঙ্গলবার আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্মিংহাম হাসপাতালে প্রথম একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ার পরদিন বুধবার দ্বিতীয় কন্যার জন্ম দেন। নিজের সামাজিক মাধ্যমে তিনি একথা জানান। ঘটনাটিকে বিরল ও অলৌকিক হিসাবে আখ্যায়িত করে চিকিৎসকদেরও ‘অবিশ্বাস্য’ বলে প্রশংসা করেছেন হ্যাচার।

মাত্র ১৭ বছর বয়সে কেসলি হ্যাচারকে জানানো হয় যে, তার দুটি আলাদা জরায়ু রয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, এমন জন্মগত অসঙ্গতি খুবই বিরল। শূণ্য দশমিক তিন শতাংশ নারীর ক্ষেত্রে এমনি হতে দেখা যায়। শুধু তাই নয়, এই ধরনের জরায়ুকে গর্ভধারনের সম্ভাবনাও ১০ লাখে একজন।

চিকিৎসা বিদ্যায় লিপিবদ্ধ এমন ঘটনা অত্যন্ত বিরল। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের এক চিকিৎসক ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা-বিবিসি’তে জানিয়েছিলেন, একজন নারী তার অন্য জরায়ুতে একটি অকাল শিশু জন্ম দেয়ার প্রায় এক মাস পরে, যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।

মিসেস হ্যাচারের ক্ষেত্রে আগের তিনটি সুস্থ গর্ভধারণ হয়েছিলো। এ সময় তিনি নিজেকে শুধুমাত্র একটি জরায়ুতে গর্ভবতী বলে বিশ্বাস করেছিলেন। একটি নিয়মিত আল্ট্রাসাউন্ডের রিপোর্ট যখন জানালো, তার দ্বিতীয়টিতে একটি শিশু রয়েছে, তখন বিষ্ময়ে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন কেসলি হ্যাচার।

বার্মিংহাম হাসপাতালের চিকিৎকরা জানান, হ্যাচারের গর্ভাবস্থা ছিলো খুব নিয়মমাফিক। প্রফেসর রিচার্ড ডেভিস বলেন, দুই শিশু বেড়ে উঠার জন্য দুই জরায়ুতে যথেষ্ট জায়গা পেয়েছে, পরিবেশ ছিলো যথাযত। প্রফেসর ডেভিস দুই সন্তান জন্ম দেয়ার প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

গর্ভধারণের ৩৯ সপ্তাহের মাথায় হ্যাচারের প্রসব ব্যথা উঠে। ১৯ ডিসেম্বর স্থানীয় সময় রাত পৌনে আটটার সময় তার একটি জরায়ু থেকে যখন প্রথম শিশুটি বেরিয়ে আসে তখন গোটা প্রসবকক্ষে উল্লাসে ফেটে পড়ে চিকিৎসক দল। পরের দিন সকাল ছয়টা ১০ মিনিটের সময় অস্ত্রপোচারের মাধ্যমে দ্বিতীয় কন্যার জন্ম হয়।

 

Scroll to Top