ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলো থেকে হিজাব নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী কে সিদ্দারামাইয়া। গত শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি নিজেই জানিয়েছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী কে সিদ্দারামাইয়া তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘আমি ইতিমধ্যেই সরকারি কর্তাদের বলেছি, শনিবার (আজ) থেকে যেন হিজাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। পোশাক, খাবার–দাবার, এসব প্রতিটি মানুষের একান্ত ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয়। এসব বিষয়ে কারও হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।’
কর্ণাটক রাজ্যের কংগ্রেস–শাসিত সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কে কী পরবেন, কে কী খাবেন, তা একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়। ব্যক্তিগত পছন্দ অনুযায়ী তা ঠিক করা হয়। সরকার কেন ব্যক্তির সেই অধিকারে নাক গলাবে? যার যা খেতে ইচ্ছা করে, সে তাই খাবে। যার যা পরতে ইচ্ছা করে, তাই পরবে। আমি ধুতি পরি। কেউ প্যান্ট পরে। এতে কার কী বলার থাকতে পারে? অন্যায়ই–বা কোথায়?’
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে বিজেপি শাসিত সরকারের আমলে রাজ্যের সরকারি স্কুলের শ্রেণীকক্ষে মুসলমান শিক্ষার্থীদের হিজাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এ সিদ্ধান্তের জেরে রাজ্যের উত্তেজনা এতটাই প্রকট হয়েছিল যে, শেষে আদালত পর্যন্ত গড়ায় বিষয়টি।
তখন মুসলিম ছাত্রীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা নিষিদ্ধ করতে কর্ণাটক রাজ্যে তৎকালীন বিজেপি সরকার বলেছিল, সাম্য, অখণ্ডতা এবং জনসাধারণের আইন-শৃঙ্খলাকে বিঘ্নিত করে এমন পোশাক পরা উচিত নয়।
পরে অবশ্য এই রায়ের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন কিছু শিক্ষার্থী। কিন্তু আদালতের পক্ষ থেকেও একই আদেশ বহাল থাকে।
ভারতের কর্ণাটকসহ বিভিন্ন রাজ্যে শুধু হিজাবই নয়, আজানের মাইক বন্ধ, হালাল মাংস বেচাকেনা নিয়েও নানান নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ও হচ্ছে। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশে সরকার গঠনের পর মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব প্রকাশ্যে মাছ–মাংস বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। আর এর পরেই ভাংচুর করা হয়েছে বিভিন্ন হালাল মাংসের দোকান।