ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ধারনা কঠোর ভাষায় প্রত্যাখ্যান করেছেন ব্রিটেনে নিযুক্ত ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত জিপি হটোভলি। তিনি গতকাল (বুধবার) স্কাই নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তেল আবিবের দীর্ঘদিনের গোপন পরিকল্পনার কথা ফাঁস করে দিয়েছেন।
স্কাই নিউজের সাংবাদিক তার কাছে একাধিকবার জানতে চান, “একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে কি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব?” উত্তরে হটোভলি বলেন, “এই প্রশ্নের উত্তর নিশ্চিতভাবে না।” লন্ডনে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে জিপি হটোভলি ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন লিকুদ পার্টির নেতা ছিলেন।
তিন দশকেরও বেশি সময় আগে ১৯৯৩ সালে অসলো চুক্তি স্বাক্ষরের সময় থেকে ইসরাইল ও তার প্রধান পৃষ্ঠপোষক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিন সংকটের ‘দুই রাষ্ট্র-ভিত্তিক’ সমাধানের কথা বলে এসেছে। কিন্তু স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে ঝুলিয়ে রেখে বারবার মার্কিন কর্মকর্তাদেরকে মুখে ‘দুই রাষ্ট্র-ভিত্তিক’ সমাধানের বুলি আওড়াতে দেখা গেছে। তবে বাস্তবে আমেরিকা বা ইসরাইল কেউই যে ফিলিস্তিন নামক কোনো রাষ্ট্রের অস্তিত্ব মেনে নিতে রাজি নয়, গাজা যুদ্ধের সুবাদে সেকথা স্পষ্ট করে দিলেন ইসরাইলের এই নারী কূটনীতিক।
কয়েক দিন আগে নেতানিয়াহুর এক বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করে হটোবলি বলেন, “বিশ্বকে একথা উপলব্ধি করতে হবে যে, গত ৭ অক্টোবর অসলো চুক্তির ইতি ঘটেছে এবং আমাদেরকে নতুন কিছু ভাবতে হবে।” তিনি বলেন, “অসলো চুক্তি এজন্য ব্যর্থ হয়েছে যে, ফিলিস্তিনিরা কখনও ইসরাইলের পাশাপাশি একটি রাষ্ট্র চায়নি, তারা বরং নদী থেকে সাগর পর্যন্ত একটি রাষ্ট্র চায়।”
তিনি কেন ‘দুই রাষ্ট্র-ভিত্তিক’ সমাধানকে সমর্থন করছেন না- স্কাই নিউজের সাংবাদিক আবার ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতের কাছে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। হটোবলি বলেন, “আপনি কেন বারবার এমন একটি ফর্মুলা নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করছেন যা কখনও কাজ করেনি? ওই ফর্মুলা তো ফিলিস্তিনিদের মধ্যে হামাসের মতো উগ্রবাদীদের জন্ম দিয়েছে।”
গাজাবাসীকে নতুন করে ‘দীক্ষা দেয়ার’ সময় এসেছে বলেও মন্তব্য করেন এই ইসরাইলি কূটনীতিক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি ও জাপানের নাগরিকদেরকে নতুন করে দীক্ষা দেয়ার মাধ্যমে ওই দুই দেশের নাগরিকদের ইহুদি-বিরোধী মনোভাব যেভাবে বিলুপ্ত করা হয়েছে গাজাবাসীর পাঠ্য বই নতুন করে বিন্যাসের মাধ্যমে একই কাজ করতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।