\’আমি ইসলামকে দেখতে পাইনি, আমি তা খুঁজে পেয়েছি\’

জার্মান নারী ক্রিশ্চিয়ানি ব্যাকার। ছোটকাল থেকেই ছিল শিল্পকলার প্রতি অত্যাধিক আগ্রহ। তিনি তার জীবনের প্রথম ২০ এর দশকে এমটিভি ইউরোপ এর একজন উপস্থাপক হিসেবে তার স্বপ্নের মধ্যই বাস করছিলেন। মাইক জগের এবং বনোর মতো সেলিব্রিটিদের সঙ্গে নিয়মিত অনুষ্ঠান পরিচালনা করতেন।

বাইরে থেকে দেখলে, তিনি যা কিছু আশা করেছিলেন তার সবই পেয়েছেন। কিন্তু ভেতরের দিকে, কখনো কখনো বিষণ্নতা ও নিষ্পেষণের অনুভূতি তাকে প্রচণ্ড হতাশ করে দিত। এরপর হঠাৎ করে তিনি বিখ্যাত পাকিস্তানি ক্রিকেটার ইমরান খানের সান্নিধ্যে আসেন। ইমরান খান তাকে সঙ্গীতের মাধ্যমেই ইসলামের আলোয় নিয়ে আসেন এবং আধ্যাত্মিক শান্তির এক নতুন ধারণা দেন।

ইমরান খান সম্পর্কে ক্রিশ্চিয়ানি ব্যাকার বলেন, তিনিই ছিলেন আমার ইসলামের প্রথম সূচনা। আমি বলতে চাই, আমি এটি দেখতে পাইনি, আমি এটি খুঁজে পেয়েছি। একজন জার্মান হিসেবে ব্যাকার হ্যামবুর্গে বেড়ে ওঠেন।

তিনি সবসময়ই শিল্পকর্মের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। ইমরান খানের আমন্ত্রণে লাহোরে একটি ক্যান্সার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করতে তিনি পাকিস্তান সফর করেন। ওই সফরে তিনি সুফি ইসলামের সুর-সঙ্গীত কাওয়ালি গানের সঙ্গে তিনি পরিচিত হন। একজন শিল্পানুরাগী হিসেবে এর সৌন্দর্য খুব স্বাভাবিকভাবেই তাকে আকৃষ্ট করে।

তিনি এর প্রতি এতটাই বিমোহিত হয়ে পড়েন যে, এসব গানের প্রতিটি কথা, প্রতিটি কণ্ঠস্বর তার কাছে মনে হত যেন প্রেমের এক উচ্চতর বিন্যাসের সঙ্গে সংযুক্ত; যেটি মানুষের মধ্যে অনুভূত হতে পারে না। ব্যাকার বলেন, সঙ্গীতের পাশাপাশি পাকিস্তানি জনগণের মানবতাবোধ, আতিথেয়তা, উষ্ণতা তাকে খুব বেশি স্পর্শ করেছে।

তিনি জানান, যে সমস্ত লোকের কাছে তিনি অর্থ সাহায্যের জন্য গিয়েছিলেন, তাদের আর্থিক অবস্থা যাই হোক না কেন, ইমরানের দাতব্য প্রকল্পের জন্য সহায়তা করতে তারা খুবই আন্তরিক ছিল। তিনি বলেন, আমরা পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলের পাহাড়ি দরিদ্র এলাকার জনগণের সঙ্গে সাক্ষাত করেছি। তারা অত্যন্ত উদারতার সঙ্গে আমাদের স্বাগত জানায়।

তিনি বলেন, একেবারে ছিন্ন বস্ত্র পরিহিত অনেক পুরুষ ইমরানের হাসপাতালের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। তারা তাদের সাধ্যমত এই তহবিলে কিছু রুপি দান করেন। নারীরা তাদের গহনা বের করে এনে তা হাসপাতালে জন্য দান করেন। আমি বলতে চাই, আমি ইসলামকে দেখতে পাইনি, আমি তা খুঁজে পেয়েছি। ব্যাকারের মনে সশ্রদ্ধ ভয় ছিল। তার বিনোদন শিল্প জীবনের অভিজ্ঞতা, বিশেষত পশ্চিমা পপ সঙ্গীতের বহিরঙ্গ এবং পাকিস্তানে তার প্রত্যক্ষ করা আত্মিকতার মনোভাবের মধ্যে যে পার্থক্য তা তাকে বিস্মিত করে। চূড়ান্তভাবে ইসলামে ধর্মান্তরিত হওয়ার আগে তিনি তিন বছর সময় নেন। পাকিস্তানে তার ওই সফরের পর থেকে তার মনকে সেতারের তারের মতো আঘাত করতে থাকে। পরে ইসলাম সম্পর্কে গবেষণা করতে শুরু করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৪ ঘণ্টা, ০৩ নভেম্বর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/সাদ

Scroll to Top