ইরানে মোরালিটি গার্ড বা নৈতিক প্রহরী নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী দলের সঙ্গে সরকারের সম্পৃক্ততা নিয়ে নথি ফাঁস করে বিপাকে পড়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম ইতেমাদ। তাদের প্রকাশিত নথি অনুযায়ী, নারীদেরকে হিজাব পরতে বাধ্য করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এই স্বেচ্ছাসেবী দলটিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
বিচার বিভাগের সংবাদ পোর্টাল ‘মিজান\’ জানিয়েছে, ইতেমাদ যে নথি প্রকাশ করেছে তা ‘অতি গোপনীয়\’। এজন্য সংবাদপত্রটির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে দেশটির পাবলিক প্রসিকিউটর অফিস।
ইরানের মেয়েদের পাবলিক প্লেস বা গণপরিসরে মাথা ঢেকে রাখা পোশাক বা হেডস্কার্ফ পরা বাধ্যতামূলক। ইতেমাদের প্রকাশিত নথিটি এই আইন প্রয়োগে কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবী নীতি প্রহরী নিয়োগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা সংক্রান্ত। এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততার বিষয়টিকে এড়িয়ে গিয়েছিল। গত সপ্তাহে মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, স্বেচ্ছাসেবী এই দলের সদস্যরা মন্ত্রণালয় বা নীতি পুলিশের সদস্য নন। কিন্তু ইতেমাদের প্রকাশিত নথিতে দেখা যায় তাদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
গত মাসে আরমিতা গেরাভান্ড নামে ১৬ বছরের এক মেয়ের মৃত্যুর পর স্বেচ্ছাসেবী দলটিকে নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে ইরানে। তেহরান মেট্রোতে হিজাব না পরার কারণে নীতি প্রহরীর সদস্যরা তাকে হেনস্তা করেন। এরপর তাকে গোপনীয়তা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং এক পর্যায়ে তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চলে যান। কয়েক সপ্তাহ পরে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনাকে এক বছর আগের মাহসা আমিনির মৃত্যুর সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে।
পোশাকবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ২২ বছর বয়সি কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করে ইরানের নৈতিক পুলিশ। পরে তাকে হেফাজতে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ উঠে। এক পর্যায়ে নিপীড়নের শিকার হয়ে মাহসা মারা যান। মারা যাওয়ার পর থেকেই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে ইরান। বিক্ষোভ দমাতে শত শত ইরানি তরুণকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।