ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর যুদ্ধাপরাধের এবং উপত্যকার সার্বিক পরিস্থিতির তদন্ত চেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) আবেদন করেছে বাংলাদেশসহ ৫টি দেশ। অন্য দেশগুলো হলো দক্ষিণ আফ্রিকা, বলিভিয়া, কমোরোস এবং জিবুতি।
গত শুক্রবার আইসিসির জ্যেষ্ঠ প্রসিকিউটর করিম আহমেদ খান জানিয়েছেন, ৫ দেশের প্রতিনিধিদের এই যৌথ আবেদন গ্রহণ করেছে আইসিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (পূর্বে টুইটার) দেওয়া এক বিবৃতিতে আইসিসির প্রসিকিউটর করিম আহমেদ খান জানান, দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ, বলিভিয়া, কমোরোস ও জিবুতি যৌথভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে ওই আবেদন করেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকা বলেছে, গাজার বর্তমান পরিস্থিতির দিকে আইসিসি যেন জরুরিভিত্তিতে মনোযোগ দেয় ও তা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়েছে তারা।
২০১৪ সালের ১৩ জুন ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ নিয়ে আগে থেকেই একটি তদন্ত চালিয়ে আসছে আইসিসি। ফলে শুক্রবার বাংলাদেশসহ পাঁচটি দেশ যে আবেদন জমা দিয়েছে, বাস্তবে সেটির প্রভাব হবে সীমিত।
আইসিসির প্রসিকিউটর বলেন, গত ৭ অক্টোবরের হামলার পর থেকে সংঘাত ও সহিংসতা বৃদ্ধির ঘটনাও তদন্তের আওতায় আনা হচ্ছে।
করিম আহমেদ খান আরও জানিয়েছেন, ২০০২ সালে যে রোমান সংবিধির ওপর ভিত্তি করে আইসিসি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা অনুযায়ী কোনো সদস্য রাষ্ট্র যদি বাইরের কোনো রাষ্ট্রের হামলার শিকার হয় ও ওই হামলাকারী রাষ্ট্র যদি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত সনদে সইকারী কিংবা স্বীকৃতি দানকারী দেশ না-ও হয়, ওই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে পারবে আইসিসি।
আইসিসি প্রসিকিউটরের দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, এরই মধ্যে তারা ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ও ফিলিস্তিনিদের মাধ্যমে ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের ‘উল্লেখযোগ্য তথ্য ও প্রমাণ’ সংগ্রহ করেছে।
ইসরাইল আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সদস্য নয়। এ আদালতের বিচারিক এখতিয়ারকেও স্বীকৃতি দেয় না দেশটি। তবে ফিলিস্তিন অঞ্চল ২০১৫ সাল থেকে আইসিসির সদস্য। সে কারণেই ফিলিস্তিনে ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত দিয়েছিল আইসিসি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার অধিদপ্তর ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো অভিযোগ করে আসছে, গাজায় হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স ও শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়ে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করছে ইসরাইল। এছাড়া সংস্থাগুলোর অভিযোগ, গাজায় অবরোধ চাপিয়ে দিয়ে বেসামরিক নাগরিকদের খাবার, পানি ও চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করাও মানবতাবিরোধী অপরাধ।