অভিজ্ঞতা না থাকলে অনুমতি পাবে না বিদেশি পর্যবেক্ষক

সংগৃহীত ছবি

নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালার সংশোধনী জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কেবল অভিজ্ঞদেরই ভোট পর্যবেক্ষণের সুযোগ রাখা হয়েছে। আর সুষ্ঠু নির্বাচন পরিপন্থি কাজ করলে নির্বাচনি এলাকা থেকে বহিষ্কারসহ পর্যবেক্ষণের অনুমতি বাতিলের কথাও বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এই নীতিমালা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। বিদেশি পর্যবেক্ষক বা গণমাধ্যমকর্মীদের যোগ্যতা, করণীয়, ভিসা প্রক্রিয়া ইত্যাদি সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে নীতিমালায়।আর সুষ্ঠু নির্বাচন পরিপন্থি কোনো কাজ করলে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের সংশ্লিষ্ট সংসদীয় আসন থেকে বহিষ্কার করার ক্ষমতা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পর্যবেক্ষকদের অনুমতি ও ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়া স্পষ্ট করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সংশোধিত নীতিমালায় বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অভিজ্ঞতার বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পর্যবেক্ষকদের নির্বাচন, সুশাসন, গণতন্ত্র, শান্তি প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার সম্পর্কিত কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা থাকতে। যে দেশ থেকে আসতে চায় সেই দেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষ থেকে নিবন্ধিত হতে হবে এবং তার প্রমাণপত্র দাখিল করতে হবে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণের আবেদনে সিভিতে এ অভিজ্ঞতার কথা উল্লে­খ করতে হবে। সংযুক্ত করতে হবে অভিজ্ঞতার সনদ। নির্বাচনি অপরাধ কিংবা জাল-জালিয়াতি বা অসততাজনিত কোনো অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি নির্বাচন পর্যবেক্ষণে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, আবেদনের সঙ্গে ইসি নির্ধারিত ঘোষণাপত্র স্বাক্ষর করে জমা দিতে হবে। দোভাষী নিলে তার জন্য সব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করেতে হবে। নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে আবেদন করতে হবে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের মাধ্যমে। আবেদনপত্র বাছাইয়ের পর তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে অনাপত্তি পত্রের জন্য পাঠাবে ইসি। এর অনুলিপি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের মতামত বা অনাপত্তির বিষয় ৭ দিনের মধ্যে সরাসরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ইসিতে পাঠাবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনাপত্তি মিললে নির্বাচন কমিশন বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসাবে ভোট পর্যবেক্ষণের জন্য পর্যবেক্ষক কার্ড প্রদান করবে।

নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সংবিধান, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, নির্বাচনি আচরণ বিধি, নির্বাচনি বিশেষ কর্মকর্তা আইন, স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক নীতিমালা, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ আইনসহ অন্যান্য আইন ও বিধি মেনে চলতে হবে।

এতে আরও বলা হয়েছে, বিদেশি পর্যবেক্ষকরা পর্যবেক্ষণ করার পর প্রতিবেদন দিতে হবে। ভোটের দিন থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে ই-মেইলে বা ডাকে এ প্রতিবেদন পাঠাতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিবেদনে ভোটের আগে, ভোটের দিন ও ভোটের পরের পরিস্থিতি উলে­খ করতে হবে। বিদেশি গণমাধ্যমকেও পর্যবেক্ষকদের সব নিয়ম মেনে চলতে হবে। বিদেশি গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের ইংরেজি ‘জে’ ক্যাটাগরির ভিসা দেওয়া হবে। আর পর্যবেক্ষকরা পাবেন ‘টি’ ক্যাটাগরির ভিসা।

পর্যবেক্ষণ নীতিমালায় বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি আনার বিষয়টি এবার সংযোজন করা হয়েছে। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, পর্যবেক্ষকরা অস্থায়ীভাবে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এবং উপকরণ আমদানি বা আনতে পারবেন। এজন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। শুল্ক অব্যাহতির জন্য দাখিল করতে হবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। নির্বাচনের পর তারা এসব যন্ত্রপাতি বা উপকরণ নিয়ে যেতে পারবেন।