শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠেছে ইন্দোনেশিয়া। আজ (২৯ আগস্ট) ভোরে দেশটির অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র বালিসহ লম্বক অঞ্চলে এ ভূমিকম্প হয়।
ইউরোপিয়ান-মেডিটেরিনিয়ান সিমোলজিক্যাল সেন্টারের (ইএমএসসি) বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানান একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। অবশ্য ইন্দোনেশিয়া ও মার্কিন ভূতাত্ত্বিক সংস্থাগুলো জানিয়েছে, এ শক্তিশালী ভূমিকম্পের মাত্রা ৭ দশমিক ১ ছিল। এদিকে, এ ঘটনায় দেশটির সরকার কোনো সুনামি সতর্কতা জারি করেনি।
ইএমএসসি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল ইন্দোনেশিয়ার মাতারাম থেকে ২০৩ কিলোমিটার (১২৬ মাইল) উত্তরে ও ভূপৃষ্ঠের ৫১৬ কিলোমিটার গভীরে। ইন্দোনেশিয়ার ভূতাত্ত্বিক সংস্থার তথ্য অনুসারে, বালি ও লম্বকের উপকূলীয় অঞ্চলজুড়ে আঘাত হানা ভূমিকম্পটি মঙ্গলবার স্থানীয় সময় ভোর ৪ টার আগে অনুভূত হয়। এরপরে একই অঞ্চলে ৬ দশমিক ১ ও ৬ দশমিক ৫ মাত্রার আরও দুটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
ইএমএসসি থেকে আরো জানা যায়, শক্তিশালী ওই ভূমিকম্পের পর স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন। বালির একটি হোটেলে ম্যানেজর সুয়াদি ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ভোরের দিকে হঠাৎ করেই তীব্র কম্পন অনুভূত হয়। এ সময় হোটেলের অতিথিরা দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের অনেকে আবার ফিরে আসেন। কয়েক সেকেন্ড ধরে চলা এ ভূমকম্পে হোটেল ভবনের কোনো ক্ষতি হয়নি।
ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (বিএনপিবি) জানিয়েছে, এদিকে ভূমিকম্পের জেরে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি। বিএনপিবির মুখপাত্র আব্দুল মুহারী বলেন, এ ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থ ভূপৃষ্ঠের অনেক গভীরে হওয়ায় অতটা ধ্বংসাত্মক হয়নি।
ইন্দোনেশিয়ার জন্যসংখ্যা সাড়ে ২৭ কোটিরও বেশি, এটি এশিয়ার বৃহত্তম দ্বীপ দেশ । ভূতাত্ত্বিক অবস্থানের কারণে দেশটিতে প্রায়ই ভূমিকম্প, অগ্নুৎপাত ও সুনামির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে থাকে প্রায়ই। মূলত প্রশান্ত মহাসাগরের কথিত ‘রিং অব ফায়ারে’ অবস্থান হওয়ায় এখানে প্রায়ই ভূমিকম্প ও অগ্নুৎপাত দেখা যায়।
এর আগে ২০২২ সালে ২১ নভেম্বর ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম জাভা প্রদেশে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। সেবার প্রাথমিকভাবে ৫৬ জনের প্রাণহানির তথ্য জানানো হয়। পরে ওই ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা ৩১০ জনে পৌঁছায়।
এছাড়া ২০০৯ সালে দেশটির পাদাং শহরে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। ওই দুর্যোগে এক হাজার ১০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায়, আহত হয় আরও অনেকে। পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এরও আগে ২০০৪ সালে সুমাত্রা উপকূলে ৯ দশমিক ১ মাত্রার মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়। তার পরপরই ওই অঞ্চলে আঘাত হানে সুনামি। উভয় দুর্যোগে ১ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল।