খাবারের অর্থ যোগাতে দেহ বিক্রি করছেন দেহপসারিণীরা!

লন্ডনের লিভারপুল। এর কেনসিংটন এলাকায় শেইল রোড যেন পরিণত হয়েছে পতিতা পল্লীতে। এমনিতেই লিভারপুলে রয়েছে সবচেয়ে বেশি পরিচিত পতিতাপল্লী। দিনের খাবার যোগাড় করতেই সেখানে দেহ বিক্রি করছেন দেহপসারিণীরা। মাত্র ৪ পাউন্ডের বিনিময়ে বিকিয়ে দিতে হচ্ছে সম্ভ্রম। এ পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে আরো।

এই শহরের পতিতাপল্লী লন্ডনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যাক পতিতায় ঠাসা। তাদের সঙ্গে যোগ হচ্ছে পূর্ব ইউরোপের অসংখ্য পতিতা। ফলে খাবার, পানি, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য অর্থ উপার্জন করতে রীতিমতো লড়াই করতে হচ্ছে তাদেরকে। মাত্র ৪ পাউন্ডেই তাই তারা খদ্দেরের মনোরঞ্জনে রাজি হয়ে যাচ্ছেন। এমন কি শুধু পানীয়, খাদ্য কিনে দিলেই তাদের সম্মতি মিলছে। লন্ডনের অনলাইন মিররে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে এমন সব তথ্য।

এতে বলা হয়েছে, লিভারপুলের পতিতাপল্লীতে পুরুষদের লম্বা লাইন। এই পতিতালয়েই কয়েকদিন আগে একজন নারী যৌনকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। তারপর তাকে ফেলে দেয়া হয়েছিল একটি ডাস্টবিনে। আরেকজন যৌনকর্মীর দাঁত ভেঙে দেয়া হয়েছিল বেসবল ব্যাট দিয়ে। শুধু কি তা-ই! সেখানে দেহ ব্যবসা করছেন এমন নারীরা তাদের দুর্গতির জন্য পূর্ব ইউরোপ থেকে যোগ দেয়া নতুন নতুন যৌনকর্মীদের দায়ী করছেন।

তারা বলছেন, এসব যৌনকর্মী তাদের সঙ্গে যোগ দেয়ায় সেখানে সৃষ্টি হয়েছে খদ্দের ধরায় এক প্রতিযোগিতা। ফলে তাদের শারীরিক মেলামেশার বিনিময়ে দাবি করা অর্থের পরিমাণ আস্তে আস্তে কমছেই। অনেকে আশঙ্কা করেছেন, যুবতীদের পাচার করে লিভারপুলে ওই পতিতালয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আগস্টে এসব বিষয়ে তদন্ত করে লিভারপুল ইকো। তাতে দেখা যায়, লিভারপুলের কেনসিংটনে শেইল রোড নতুন পতিতাপল্লীর রূপ পেয়েছে। ওই রোডে বসবাস করেন লিয়াম নামে একজন। তিনি মাঝে মাঝে যৌনকর্মীদের নিরাপত্তা দিয়ে থাকেন।

লিয়াম বলেন, অনেক যুবতীই এখানে দিনে মাত্র ৪ পাউন্ডের বিনিময়ে দেহ বিলিয়ে দেয়। সামান্য অর্থের জন্য তারা যেকোনো সময় এমন সম্পর্ক গড়তে প্রস্তুত। তিনি বলেন, আমি দেহব্যবসার দালাল নই। তাদের অর্থের প্রয়োজন নেই আমার। তারা শুধু আমাকে পানীয়, খাদ্য দেয়। তাদের কাছ থেকে আমি কোনো অর্থ নিই না। আমি শুধু সততার সঙ্গে তাদের পক্ষ নিই। এ বিষয়ে বিবিসি থ্রি একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করেছে। তাতে লিয়ামকে দেখা যায় একজন উগ্র খদ্দেরকে মোকাবিলা করছেন। ওই খদ্দের একজন যৌনকর্মীকে একা ছেড়ে দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছিলেন। নাতালিয়ে নামের একজন যৌনকর্মীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক আছে লিয়ামের। ওই যৌনকর্মী মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ার পর থেকেই শেইল রোডে দেহব্যবসা করে আসছেন।

তিনি বলেছেন, এখানে দিন দিন যৌন ব্যবসা কঠিন হয়ে পড়ছে। দর নেমে যাচ্ছে। নিজের অবস্থান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, আমার ইচ্ছে করে লিয়াম আমাকে ভালবাসুক। কিন্তু অন্যেরা আমাকে জড়িয়ে ধরে। তাদের শয্যাসঙ্গীনি হতে হয়। আমার কাছে স্বাভাবিক বিষয় হলো সকালে ঘুম থেকে উঠেই পোশাক পরা। প্রস্তুত হওয়া। আরেকজন নতুন খদ্দের ধরা। সেটা দিনে, রাতে এক সমানে চলতে থাকে। নাতালিয়ের রুমমেট হলেন জ্যাক। তার মাদকের নেশা রয়েছে ৩০ বছর ধরে।

তিনিও মনে করেন, পূর্ব ইউরোপের যৌনকর্মীদের আধিক্যের কারণে সেখানে সার্বিকভাবে যৌনকর্মীদের দরদাম কমে যাচ্ছে। দিনের বেলায়ও তাদের ওপর হামলা হচ্ছে। তার ভাষায়, এখানে খুব কম অর্থের বিনিময়ে দেহ ব্যবসা করতে আসছে সার্বিয়া ও ক্রোয়েশিয়া থেকে যুবতীরা। তারা এটা পারছে। কারণ, পূর্ব ইউরোপে জীবনযাত্রা সস্তা। তাই তারা অল্প অর্থের বিনিময়ে দেহ বিলিয়ে দিচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, ২৯ অক্টোবর  ২০১৭

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/কেএসপি

Scroll to Top